সবজির দাম কমতির দিকে, মুরগি-পেঁয়াজ বাড়ছে
করোনাভাইরাসজনিত বৈশ্বিক মহামারির কারণে আয় কমে গেছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের। অর্থনীতিতেও বিরাজ করছে এক ধরনের স্থবিরতা। এর মধ্যে কয়েকদফা বন্যার কারণে বাজারে শাক-সবজির দাম বেড়ে যায় হু হু করে। কাঁচাবাজারে গিয়ে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের বেশ নাকালই হতে হয়। বিশেষ করে গত সপ্তাহে কাঁচাবাজারে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজির দেখা মেলেনি।
এক সপ্তাহ পর আজ শুক্রবার সেই অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। কিছু সবজির দাম একটু কমেছে, আর কিছু সবজির দাম গত সপ্তাহের মতোই স্থিতিশীল আছে। ভাদ্রের গরমের মধ্যে বাজারে আসা শীতের শিম, লাউয়ের মতো সবজিও গত সপ্তাহের চেয়ে একটু কম দামেই কিনতে পারছেন ক্রেতারা। তবে বেড়েছে পেঁয়াজ আর বয়লার মুরগির দাম। বয়লার মুরগির দাম গত দুই সপ্তাহ ধরেই বাড়ছে।
বন্যার কারণে ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে- এই অজুহাতে সপ্তাহের মাঝখান থেকেই পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হতে শুরু করে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিলেও বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়েছে বলে মনে হয় না। এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজ ২০০ টাকা পাল্লায় (পাঁচ কেজি) বা ৪০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এ সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম অন্তত দেড়গুণ বেড়ে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। আর পাইকারি বাজারে পাঁচ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।
ক্রেতাদের আশঙ্কা, গত বছর এই সেপ্টেম্বরেই পেঁয়াজের দাম ট্রিপল সেঞ্চুরিতে গিয়ে ঠেকেছিল। এবারও কি সেই পথেই হাঁটছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই সবজি? এই শঙ্কা থেকে কোনো কোনো ক্রেতাকে প্রয়োজনের একটু অতিরিক্ত কিনে নিয়ে যেতেও দেখা গেছে। যদি আরো বেড়ে যায়, এই ভয়ে!
এদিকে শীতের আগাম সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। আজ কারওয়ান বাজারে শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা করে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০-২২০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা। পটলের দাম কিছুটা কমে ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা। দাম কমার তালিকায় থাকা কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা।
বেগুন গত সপ্তাহের মতো ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা পিস। কাঁচামরিচের ঝাঁঝ আগের মতোই কড়া। ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। যারা এক কেজি কিনছেন তারা হয়তো ২০০-২২০ টাকায় কিনতে পারছেন। গাজর আগের মতোই বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি। উস্তের কেজি ৭০-১০০ টাকা। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ছোট আকারের ফুলকপি, বাঁধাকপির পিস গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়।
আজ দুপুরে সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘গত সপ্তাহে শিম বিক্রি করেছি ১৮০ টাকা কেজিতে। সেই শিম এখন বিক্রি করছি ১২০ টাকায়। ৫০ টাকার পটল ৪০ টাকা হয়েছে। ৬০ টাকার ঝিঙা ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শীতের আগাম সবজির সরবরাহ বাড়ায় বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে। সামনে সবজির দাম আরো কমবে।’
এদিকে ব্রয়লার মুরগি আজ শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪৫ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১২৫ টাকা। তার আগে ছিল ১১০-১১৫ টাকার মধ্যে। টানা দুই সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বাড়ল ৩০ টাকা পর্যন্ত।