ওয়ালটনের ফ্রিজ বিক্রি বেড়েই চলেছে

কয়েক বছর ধরে দেশের ফ্রিজের বাজারে ৭০ শতাংশেরও বেশি মার্কেট শেয়ার নিজেদের দখলে রেখেছে বাংলাদেশি ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্র্যান্ড ওয়ালটন। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে প্রতিষ্ঠানটি ফ্রিজ বিক্রি বেড়েছে ৩০.২৯ শতাংশ। আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পাঁচ লাখ ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ ছাড়া ২০১৭ সালে তাদের লক্ষ্যমাত্রা ১৭ লাখ ফ্রিজ বিক্রি করা। এরইমধ্যে গত ১ আগস্ট এক দিনেই লক্ষাধিক ফ্রিজ বিক্রির রেকর্ড গড়েছে ওয়ালটন।
ওয়ালটনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কয়েক বছর ধরে ফ্রিজের অভ্যন্তরীণ বাজারের ৭০ শতাংশেরও বেশি এককভাবে ওয়ালটনের দখলে রয়েছে।
এর কারণ হিসেবে ফ্রিজ তৈরিতে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, ইন্টিলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির কম্প্রেসার তৈরি, পরিবেশবান্ধব আর৬০০এ গ্যাসের ব্যবহার, আকর্ষণীয় ডিজাইন, সাশ্রয়ী মূল্য এবং সেরা বিক্রয়োত্তর সেবার কথাই উল্লেখ করছে ওয়ালটন।
এ বছর ইনভার্টার প্রযুক্তির ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটরের পাশাপাশি টেম্পারড গ্লাস ডোরের দারুণ সব মডেলের ফ্রিজ বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। স্থানীয় বাজারে নতুন মডেলের দৃষ্টিনন্দন এসব ফ্রিজ ব্যাপক গ্রাহকপ্রিয়তা পেয়েছে।
চলতি বছর দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স পণ্য নির্মাতা এই প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য ১৭ লাখ ফ্রিজ বিক্রি করা। যা ২০১৬ সালের ফ্রিজ বিক্রির তুলনায় প্রায় ২৪.৫০ শতাংশ বেশি। অবশ্য, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে। একই সময়ে কারখানায় ফ্রিজ উৎপাদনও বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
সব কিছু মিলিয়ে বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ফ্রিজ বিক্রি হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ওয়ালটনের বিপণন বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক ইভা রিজওয়ানা। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ফ্রিজ বিক্রিতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি মাসে প্রবৃদ্ধির হার আরো বেশি হবে। কারণ, সামনেই কোরবানির ঈদ। আর ঈদের আগের এই সময়টাকে ফ্রিজ বিক্রির প্রধান মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
ওয়ালটনের বিপণন বিভাগের প্রধান মো. এমদাদুল হক সরকার বলেন, স্থানীয় বাজারে গ্রাহক আস্থা ও চাহিদার শীর্ষে ওয়ালটন। ফলে, চলতি মাসের প্রথম দিনেই বিক্রি হয়েছে এক লাখেরও বেশি ফ্রিজ। যা স্থানীয় বাজারে একদিনে সর্বাধিক ফ্রিজ বিক্রয়ের রেকর্ড বলে জানান তিনি। তাঁর প্রত্যাশা, স্থানীয় বাজারে চলতি বছরেও ওয়ালটনের নিরঙ্কুশ আধিপত্য বজায় থাকবে।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ওয়ালটন ফ্রিজে প্রতিনিয়ত বিশ্বের অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি যুক্ত হচ্ছে বলে জানান ওয়ালটনের সোর্সিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান আশরাফুল আম্বিয়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সংরক্ষণের নিশ্চয়তায় তৈরি হচ্ছে ওয়ালটন ফ্রিজ। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট (বিএসটিআই) কর্তৃক নির্ধারিত মানদন্ড ‘বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস ১৮৫০:২০১২’ অনুসরণ করে উচ্চ গুণগতমানের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্রিজ তৈরি করায় ওয়ালটন পেয়েছে ‘ফাইভ স্টার’ এনার্জি রেটিং। তিনি জানান, বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটন ফ্রিজই পেয়েছে বিএসটিআই’র সর্বোচ্চ এই রেটিং সনদ।
ওয়ালটন ফ্রিজে ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির কম্প্রেসার সংযোজন করায় ৫০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয় বলেও জানান এই কর্মকর্তা। তিনি জানান, পরিবেশ সুরক্ষায় কম্প্রেসারে ব্যবহার করা হয় সিএফসি এবং এইচএফসিমুক্ত গ্রিন গ্যাস আর৬০০এ রেফ্রিজারেন্ট। যা পরিবেশ সংরক্ষণের পাশাপাশি বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে।
এই মুহূর্তে বাজারে রয়েছে ওয়ালটনের শতাধিক মডেলের ফ্রস্ট, নন-ফ্রস্ট এবং ডিপ ফ্রিজ। এর মধ্যে রয়েছে ইনভার্টার প্রযুক্তির ১৬ টি মডেলের নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ, ৬টি মডেলের টেম্পারড গ্লাস ডোরের ফ্রস্ট ফ্রিজ।
গ্রাহকরা ওয়ালটন ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মডেলের ফ্রস্ট ফ্রিজ ১১ হাজার ৬’শ টাকা থেকে ৩৫ হাজার ৩’শ টাকার মধ্যে কিনতে পারছেন। পাশাপাশি, বাজারে ২৮ হাজার ৫’শ টাকা থেকে ৩৬ হাজর ৫’শ টাকার মধ্যে টেম্পারড গ্লাস ডোর এবং ৫০ হাজার ৯৯০ টাকা থেকে ৬১ হাজার ৯’শ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ইনভার্টার প্রযুক্তির ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্রিজ।
বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেস খাতের বিক্রয়োত্তর সেবায় একমাত্র ওয়ালটনেই রয়েছে আইএসও স্ট্যান্ডার্ড ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম।
এর আওতায় সারা দেশে ৬৭ টি সার্ভিস সেন্টার, ৩০০টিরও বেশি ওয়ালটন প্লাজা এবং কয়েক হাজার পরিবেশক বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে ২৫০০ প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান বিক্রয়োত্তর সেবা দিচ্ছেন। দেওয়া হচ্ছে হোম সার্ভিস।
ওয়ালটন ফ্রিজে এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টির পাশাপাশি কম্প্রেসারে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টির সুবিধাও রয়েছে।