কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা

কৃষি খাতে অভূতপূর্ব অবদানের জন্য ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পেয়েছেন ‘স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০১৫’। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম (বিবিএফ) যৌথভাবে বাংলাদেশের কৃষি খাতে অভূতপূর্ব অবদানের জন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দিয়েছে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ সোমবার ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০১৫’ শীর্ষক এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
অনুষ্ঠানে উদ্ভাবন ও গবেষণার জন্য লাল তীর সিড লিমিটেড, সহায়তা ও বাস্তবায়নের জন্য ব্র্যাক, কৃষি খাতে প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য আমার দেশ আমার গ্রাম, সেরা কৃষিবিষয়ক রপ্তানিকারক হিসেবে সিমার্ক গ্রুপকে সম্মাননা দেওয়া হয়। বছরের সেরা কৃষক সম্মাননা পেয়েছেন আবু হানিফ মোড়ল ও রেশমা বেগম, বিজয়ী হয়েছেন বিল্লাল শিকদার ও ফাতেমা জোহরা। প্রতিষ্ঠান হিসেবে বছরের সেরা কৃষক সম্মাননা পেয়েছে ভার্মি কম্পোস্ট এবং বিজয়ী হয়েছে ইন্টিগ্রেটেড ফার্মিং গ্রুপ।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবরার এ আনোয়ার ও হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স মিস বিটপি দাশ চৌধুরী এবং বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের (বিবিএফ) প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শরিফুল ইসলাম।
অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড নামে সমধিক পরিচিত এই সম্মাননা দেওয়া হয় সাত ক্যাটাগরি বা শ্রেণিতে। এ জন্য এবার মোট ৩০০ জন প্রতিযোগীর মনোনয়ন গ্রহণ করা হয়। কৃষি ও কৃষিসংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত দুটি বিজ্ঞ বিচারক প্যানেলের মাধ্যমে প্রতি বিভাগে বিজয়ীদের সম্মাননার জন্য বাছাই করা হয়।
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘দেশের কৃষি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দ্বিতীয় বছরের মতো সম্মাননা জানিয়ে অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড প্রদানের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিজয়ী ও সম্মাননার জন্য মনোনীত ব্যক্তিরা এরই মধ্যে তাঁদের কঠোর পরিশ্রম ও উদ্ভাবনের দ্বারা আমাদের কৃষি খাতে দৃষ্টান্তমূলক অবদান রেখেছেন। আমরা আশা করি, অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ও এ বছরের বিজয়ীরা তাঁদের প্রচেষ্টা ও প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখবে এবং এতে গোটা বাংলাদেশের লাখ লাখ কৃষক খাদ্য উৎপাদনকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে উৎসাহিত হবেন।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, “স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড- ২০১৫’-এর জন্য মনোনীত ও সম্মাননাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আমি আশা করি, এই পুরস্কার আমাদের তৃণমূল পর্যায়ের কৃষক, ডেইরি বা দুগ্ধশিল্প, শস্য আবাদকারী, লাইভস্টক ডিস্ট্রিবিউটর বা পশুসম্পদ পরিবেশক ও বাজারজাতকারী, গবেষক এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য শিল্পকে উৎসাহিত করবে। এর ফলে সবার প্রতিশ্রুতি কৃষি খাতকে আরেক ধাপ উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাবে।’
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবরার এ আনোয়ার বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো কৃষি খাত। আমি মনে করি, এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা দেশজুড়ে হাজার হাজার কৃষক এবং কৃষি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ দেশের কৃষি খাতে দৃষ্টান্তমূলক অবদান রাখা এবং টেকসই কৃষি খাত গড়ে তোলার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে সক্ষম হব।’
‘স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০১৫’ বিজয়ী সবার হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। বছরের সেরা কৃষক বিভাগে তিনজন বিজয়ীকে পাঁচ লাখ টাকা এবং অনারেবল মেনশন বা মনোনীতদের ৫০ হাজার টাকা করে প্রাইজ মানি বা অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে কৃষিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতের ৩০০ জন আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, বাংলাদেশ ২০১৪ সাল থেকে অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে আসছে। ওই বছর থেকেই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম (বিবিএফ) দেশের কৃষি খাতে বিশেষ অবদান রাখা কৃষকদের সম্মাননা দেওয়ার ব্যাপারে যৌথভাবে কাজ করে চলেছে।