বিশ্ববাজারে দ্রুত বাড়ছে ওয়ালটন পণ্যের চাহিদা

আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ছে বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটনের কদর। বিদেশি পরিবেশকদের মতে, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, পণ্যের উচ্চমান নিশ্চিতকরণ এবং দামে সাশ্রয়ী- মূলত এই তিন কারণে বিশ্বব্যাপী বাড়ছে ওয়ালটনের বাজার ও চাহিদা। তাদের মতে, বিশ্ববাজারে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ কথাটি এখন বেশ সম্মানের সঙ্গেই উচ্চারিত হচ্ছে।
সম্প্রতি গাজীপুরের চন্দ্রায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক পরিবেশক সম্মেলন। দ্রুত পরিবর্তনশীল ইলেকট্রনিক ব্যবসার বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রত্যয় নিয়ে চারদিনের ওই সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন ওয়ালটনের দেশি-বিদেশি ছয় হাজারেরও বেশি পরিবেশক। অন্যদের সঙ্গে সম্মেলনে অংশ নেন নেপাল, ভুটানসহ কয়েকটি দেশের ওয়ালটন পরিবেশক।
ভুটানে ওয়ালটন পণ্যের পরিবেশক স্টেট ট্রেডিং করপোরেশন অব ভুটান লিমিটেডের কর্মকর্তা সোনাম টবগে বলেন, ভুটানে ওয়ালটন পণ্যের বাজারজাতকরণ শুরু হয়েছে ২০১৪ সালে। শুরুতে ফ্রিজ, টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনারসহ বিভিন্ন হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সেস ভুটানে বাজারজাত করা হয়। বর্তমানে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন আইসিটি ডিভাইসও ভুটানে বাজারজাত করা হচ্ছে।
সোনাম টবগে জানান, ভুটানের ক্রেতাদের কাছে অতি অল্প সময়েই ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন পণ্য ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এ ক্ষেত্রে প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে ওয়ালটনের প্রতিযোগিতামূলক বাজার সক্ষমতা। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, বাজারে কোনো ব্র্যান্ডের পণ্য কতটা প্রতিযোগী সক্ষম তা নির্ভর করে কয়েকটি মৌলিক বিষয়ের ওপর। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে পণ্য তৈরি; উচ্চ গুণগতমান ও টেকসই, মূল্য সাশ্রয়ী এবং রুচিশীল ডিজাইন। এসব বিবেচনায় ভুটানের বাজারে অন্য যেকোনো ব্র্যান্ডের চেয়ে ওয়ালটন এগিয়ে। ফলে, ভুটানের বাজারে প্রতিবছর ২০ থেকে ২৫ শতাংশহারে বাড়ছে ওয়ালটন পণ্যের চাহিদা।
নেপালে ওয়ালটন পণ্যের পরিবেশক রিডা ইনকরপোরেট লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুক্তার আল আনসারি বলেছেন, সেদিন আর দেরি নেই, যেদিন নেপালিদের কাছে ওয়ালটনই হবে সেরা পণ্য। তাঁর মতে, ওয়ালটন যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে খুব শিগগিরই ওয়ালটন বললে বাংলাদেশকে চিনবে সারা বিশ্ব ।
২০১৩ সালে তাঁরা নেপালে ওয়ালটন পণ্য বাজারজাত শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই ওয়ালটন পণ্য ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বর্তমানে দুই শতাধিক সাব-ডিলারের মাধ্যমে নেপালের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশে তৈরি ওয়ালটন পণ্য।
নাইজেরিয়ার পরিবেশক ওয়েস্টার্ন বেজ নাইজেরিয়া লিমিটেডের পরিচালক ডেভিড নোনে বলেন, নাইজেরিয়ায় অন্যান্য ইলেকট্রনিক ব্র্যান্ডের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটন। সেখানে ওয়ালটন পণ্যের বিপণন শুরু হয় ২০১৬ সালে। নিয়মিত যাচ্ছে ওয়ালটনের ফ্রিজ, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন, রিচার্জেবল ফ্যান, সিলিং ও ওয়্যাল ফ্যানসহ বিভিন্ন পণ্য। নাইজেরিয়ায় উল্লেখ্যযোগ্যহারে বাড়ছে ওয়ালটনের বাজার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, সম্প্রতি নাইজেরিয়ার বাজারে ওয়ালটনের তৈরি ল্যাপটপও রপ্তানি শুরু হয়েছে। আফ্রিকার আরো কয়েকটি দেশেও ওয়ালটন পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছেন তাঁরা।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম শামসুল আলম বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নিচ্ছে ওয়ালটন। উদ্দেশ্য একটাই- ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ।
ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের প্রধান রকিবুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ভারত, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকাসহ বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটন পণ্য। তিনি জানান, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, উচ্চ গুণগতমান, সাশ্রয়ী মূল্যের কারণে বিশ্ববাজারে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে ওয়ালটন। আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণে নতুন নতুন আরো কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।