রবি-এয়ারটেল এক হতে আলোচনা শুরু

দেশের দুই টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান ভারতী এয়ারটেল ও মালয়েশিয়া ভিত্তিক আজিয়াটা গ্রুপ (রবি) একীভূত হয়ে কাজ করার জন্য আলোচনা শুরু করেছে। এয়ারটেল ও রবি নামে পরিচিত দুই প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে কথাবার্তা শুরু করেছে। উভয় প্রতিষ্ঠান সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আজ বুধবার এ কথা জানিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আজিয়াটা গ্রুপ বারহাদ (আজিয়াটা) ও ভারতী এয়ারটেল লিমিটেড (ভারতী) এই মর্মে যৌথভাবে ঘোষণা করছে যে, উভয় পক্ষ দীর্ঘ ও সুচিন্তিত আলোচনার পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে তারা তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশস্থ মালিকানাধীন টেলিকমিউনিকেশন্স ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের, যথাক্রমে রবি আজিয়াটা লিমিটেড (রবি) ও এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেড (এয়ারটেল), ব্যবসা একীভূত করা যায় কি না- তা পর্যালোচনার কাজ শুরু করেছে।’
এদিকে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’ জানিয়েছে, ভারতভিত্তিক টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান ভারতী এয়ারটেলের বাংলাদেশে গ্রাহক সংখ্যা ৯০ লাখ। অন্যদিকে রবির গ্রাহক সংখ্যা দুই কোটি ৮০ লাখ। দুই প্রতিষ্ঠানের একীভূত হওয়ার পর তা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
পাঁচ কোটিরও বেশি গ্রাহক নিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন।
তবে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো আছে, ‘তবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই যে দুই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান একীভূত করার যে পর্যালোচনা প্রক্রিয়া তা সুনিশ্চিত চুক্তিতে পরিণত হবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা আছে, ‘এই ঘোষণা উভয় প্রতিষ্ঠানের পর্যালোচনার উদ্যোগকে সহায়তা এবং পরস্পরের মধ্যে তথ্য আদান প্রদানের সুবিধা ও এতদসম্পর্কিত নিয়ন্ত্রক (রেগুলেটরি বডি) সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনার পথকেও সহজ করবে। এই বিষয়ে বিশেষ কোনো অগ্রগতি সাধিত হলে আজিয়াটা ও ভারতী পরবর্তীতে ঘোষণা দেবে।’
এ ব্যাপারে এয়ারটেলের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান শমিত মাহবুব শাহাবুদ্দিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আলোচনা মাত্র শুরু হয়েছে। বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। কেননা দুইটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানকে একীভূত হওয়ার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট সময় লাগবে। এখানে দুটি আলাদা নম্বরের বিষয় আছে, শেয়ারসহ বহুমুখী বিষয় আছে। আলোচনা ফলপ্রসূ হবে কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিষয়গুলোর আলোচনা হচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে, যেহেতু দুটি প্রতিষ্ঠানই বিদেশভিত্তিক। স্থানীয়ভাবে এটা নিয়ে কাজ করার সময় আসেনি এখনো।’
তবে এয়ারটেলের এক মুখপাত্র দ্য হিন্দু পত্রিকাকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেখানে আমরা কৌশলগত অংশীদার থাকব, উভয় প্রতিষ্ঠান এক হয়ে তিন কোটি ৭০ লাখ গ্রাহক নিয়ে দেশের দ্বিতীয় টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবো।’
আজিয়াটা গ্রুপ বারহাড, মালয়েশিয়া এবং এনটিটি ডোকোমো ইনকরপোরেটেড, জাপানের একটি যৌথ প্রতিষ্ঠান রবি আজিয়াটা লিমিটেড। রবি আজিয়াটা আগে টেলিকম মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল (বাংলাদেশ) নামে পরিচিত ছিল। অ্যাকটেল ব্র্যান্ড হিসেবে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে এর যাত্রা শুরু হয়। ২০১০ সালের ২৮ মার্চ, এই সেবাটি ‘রবি’ ব্র্যান্ড হিসেবে অভিহিত হয়, এবং প্রতিষ্ঠানটি রবি আজিয়াটা লিমিটেড নামে পরিচিত হয়।
বাংলাদেশে ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করে ওয়ারিদ টেলিকম। ২০১০ সালে এ প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শেয়ার গ্রহণ করে এয়ারটেল গ্রাহকসেবা শুরু করে।