ঈদুল আজহায় ওয়ালটনের ১৪৫ মডেলের ফ্রিজ বাজারে

আসছে কোরবানির ঈদ। বাংলাদেশে এই ঈদে ফ্রিজের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। সাধারণ প্রয়োজনের পাশাপাশি কোরবানির গোস্ত সংরক্ষণের তাগিদে ফ্রিজ কেনেন ক্রেতারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এবারের ঈদে ১৪৫ মডেলের ফ্রস্ট, নন-ফ্রস্ট, স্মার্ট এবং ডিপ ফ্রিজ নিয়ে এসেছে দেশের ইলেকট্রনিক পণ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। এর মধ্যে নতুন এসেছে ৫৩ মডেলের ফ্রিজ।
সূত্র মতে, কোরবানি ঈদে ফ্রিজের বাড়তি চাহিদাকে ঘিরে চার লাখ ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে ওয়ালটন। টার্গেট পূরণে বাজারে সর্বোচ্চ সংখ্যক মডেলের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানটি। কারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি গড়ে তুলেছে পর্যাপ্ত মজুদ। সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে নিয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। কারখানা থেকে ২৪ ঘণ্টা পণ্য পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
এদিকে ‘ঈদের খুশি জমবে ভারী, নতুন গাড়ির ছড়াছড়ি’ এই স্লোগানে গত জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে দেশব্যাপী ঈদ মেগা ডিজিটাল ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে ওয়ালটন। এর আওতায় দেশের যে কোনো ওয়ালটন প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুম থেকে ফ্রিজ কিনে রেজিস্ট্রেশন করলেই ক্রেতারা পাচ্ছেন নতুন গাড়ি, ফ্রিজ, টিভি, এসিসহ অসংখ্য পণ্য সম্পূর্ণ ফ্রি। ওই সব সুবিধা না মিললেও পাচ্ছেন নিশ্চিত ক্যাশব্যাক। ক্রেতারা এসব সুবিধা পাবেন কোরবানির ঈদ পর্যন্ত।
জানা গেছে, ঈদ মেগা ক্যাম্পেইনের আওতায় গত মাসেই ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে নতুন গাড়ি পেয়েছেন দুজন ক্রেতা। একজন হচ্ছেন ঢাকার পুলিশ কনস্টেবল আরাধন চন্দ্র সাহা। অন্যজন হচ্ছেন চট্টগ্রামের গৃহবধূ সীমা শীল।
ওয়ালটনের বিপণন কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে ১৪৫ মডেলের ফ্রিজ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে ওয়ালটন। এর মধ্যে রয়েছে ১০৩ মডেলের ফ্রস্ট ফ্রিজ, ৩১ মডেলের নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ ও ১১ মডেলের ডিপ ফ্রিজ।
ঈদে ক্রেতাদের হাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ফ্রিজ তুলে দিতে ৫৩টি নতুন মডেলের ফ্রিজ বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। এর মধ্যে ফ্রস্ট ফ্রিজে নতুন এসেছে ৪১ টি মডেল, নন-ফ্রস্টে ৮ টি মডেল এবং ডিপ ফ্রিজে চারটি মডেল।
এরই মধ্যে, চোখ ধাঁধানো ডিজাইন ও কালারের ১৯ মডেলের টেম্পারড গ্লাস ডোরের ফ্রস্ট ফ্রিজ ক্রেতাদের কাছে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তাই এই ক্যাটাগরির ফ্রিজে যুক্ত হয়েছে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির দুটি নতুন মডেল। টেম্পারড গ্লাস ডোরে তৈরি ওয়ালটন ফ্রস্ট ফ্রিজের দাম পড়ছে ২৪ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া ঈদে এসেছে বিএসটিআইয়ের ‘ফাইভ স্টার এনার্জি রেটিং’ সনদপ্রাপ্ত ৩ মডেলের ফ্রস্ট ফ্রিজ। এসব ফ্রিজের দাম পড়ছে ২৮ হাজার ৭৫০ টাকা থেকে ২৯ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
ছোট পরিবার কিংবা ব্যাচেলরদের ব্যবহার উপযোগী ৫০ লিটার ও ১০৭ লিটার আয়তনের দুটি নতুন মডেলের ফ্রস্ট ফ্রিজ বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। দাম পড়ছে যথাক্রমে ১০ হাজার ৯০০ ও ১৪ হাজার ২০০ টাকা। ওয়ালটনের ৩১ মডেলের নন-ফ্রস্ট ফ্রিজের মধ্যে ইনভার্টার প্রযুক্তির রয়েছে ১০টি মডেল। এর মধ্যে নতুন যুক্ত হয়েছে সাইড বাই সাইড বা পাশাপাশি দুই দরজার ৫০১ লিটারের রেফ্রিজারেটর এবং তিন-দরজা বিশিষ্ট ৪৫৫ লিটার ও ৪৫২ লিটারের রেফ্রিজারেটর। আরো রয়েছে ৩২৮ লিটারের ডিজিটাল ডিসপ্লে ও ফাইভ স্টার সনদপ্রাপ্ত ৩২৮ লিটারের দুটি নতুন মডেলের নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর।
ওয়ালটনের ডিপ ফ্রিজ বা ফ্রিজারের মধ্যে চারটি নতুন মডেলসহ রয়েছে মোট ১১টি মডেল। এবারের কোরবানি ঈদে গ্রাহকদের জন্য ওয়ালটনের নতুন চমক হচ্ছে আকর্ষণীয় ডিজাইনের ১৪৬ লিটারের টেম্পারড গ্লাস ডোরের ডিপ ফ্রিজ। ওয়ালটন ডিপ ফ্রিজের দাম পড়ছে ১৯ হাজার ৯৫০ টাকা থেকে ৩১ হাজার ২৯০ টাকা পর্যন্ত।
ওয়ালটনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম জানান, রোজার ঈদের পর পরই প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ওয়ালটন। জুলাই ও আগস্ট মাসে মোট চার লাখ ইউনিট ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট নেওয়া হয়েছে। বিক্রির বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে টার্গেটের চেয়েও বেশি ফ্রিজ বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদী।
ওয়ালটনের ফ্রিজ গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী তাপস কুমার মজুমদার জানান, ওয়ালটন ফ্রিজের দরজায় ব্যবহার করা হয়েছে ৯-লেয়্যার ভিসিএম ডোর। এর ফলে সহজে মরিচা ও দাগ পড়ে না। ডোর হয় দীর্ঘস্থায়ী এবং উজ্জ্বল। ফ্রিজে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব এইচএফসি গ্যাসমুক্ত আর৬০০এ রেফ্রিজারেন্ট। আন্তর্জাতিক মান যাচাইকারী সংস্থা নাসদাত ইউনিভার্সাল টেস্টিং ল্যাব থেকে ওয়ালটনের প্রতিটি ফ্রিজের মান নিশ্চিত করেই বাজারে ছাড়া হচ্ছে। তাই, স্থানীয় বাজারে গ্রাহকপ্রিয়তার শীর্ষে ওয়ালটন ফ্রিজ।
তাপস কুমার মজুমদারের দাবি, ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার, ন্যানো হেলথ কেয়ার ও এন্টি ফাংগাল ডোর গ্যাসকেট প্রযুক্তির ব্যবহার, এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি, কম্প্রেসারে দশ বছর পর্যন্ত গ্যারান্টি, সর্বোচ্চ ৩৬ মাসের সহজ কিস্তি সুবিধা, বিএসটিআই’র ফাইভ স্টার এনার্জি রেটিং, স্থানীয় আবহাওয়া উপযোগী করে দেশেই তৈরি হয় বলে গ্রাহকপ্রিয়তার শীর্ষে ওয়ালটনের ফ্রিজ।
সূত্র মতে, স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে উচ্চ গুণগতমান সম্পন্ন ওয়ালটন ফ্রিজ। সম্প্রতি, বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো ফ্রিজে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ রপ্তানিও শুরু করেছে ওয়ালটন।
আইএসও সনদ প্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় দ্রুত সর্বোত্তম সেবা পৌঁছে দিচ্ছে ওয়ালটন। সারা দেশে ৭০টিরও বেশি সার্ভিস সেন্টার চালু রয়েছে। বিক্রয়োত্তর সেবায় গ্রাহকদের হোম সার্ভিস দিচ্ছে ওয়ালটন। গ্রাহকরা যেকোনো মোবাইল ফোন থেকে ১৬২৬৭ নম্বরে কল দিয়ে বছরের ৩৬৫ দিনই পাচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত সেবা। তথ্যপ্রাপ্তির পর গ্রাহকের বাড়িতে দ্রুত পৌঁছে যাচ্ছে সার্ভিস প্রোভাইডার। ওয়ালটনের এই সেবা এরইমধ্যে গ্রাহকমহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।