পাঁচ বছরের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য কপর্দকশূন্য হওয়ার শঙ্কা
তেলের দাম আশঙ্কাজনক হারে কমায় আর্থিক ভারসাম্য হারাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলো। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলছে, শুধু তেলের ওপর নির্ভর হওয়া, অর্থনীতিতে বিচিত্রতা না থাকা এবং ধারাবাহিক বড় অঙ্কের বাজেট ঘাটতি থাকায় ইরাক, সৌদি আরব, লিবিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আগামী পাঁচ বছর বা এর কম সময়ের মধ্যে নগদ অর্থ ফুরাবে।
এ থেকে বাঁচতে কুয়েত, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত গত ছয় মাসে তেলের ওপর তাদের নির্ভরতা কমিয়ে এনেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার অনলাইনে এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
ধারাবাহিকভাবে বড় অঙ্কের বাজেট ঘাটতি থাকছে ইরাক, ইরান, ওমান, আলজেরিয়া, সৌদি আরব, বাহরাইন, লিবিয়া ও ইয়েমেনের। এসব দেশ যদি তাদের অর্থনীতিতে বিচিত্রতা না আনে বা ঋণ না নেয়, তাহলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তাদের নগদ অর্থ ফুরিয়ে যাবে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে তেলের ওপর সবচেয়ে কম নির্ভরতা রয়েছে ইরানের। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের সংকটময় দেশগুলো, যেমন—লিবিয়া, ইয়েমেনের চেয়ে এর অবস্থা ভালো।
যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করায় ইরাক, লিবিয়া ও ইয়েমেনকে ভঙ্গুর রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করছে আইএমএফ। এ কারণে এসব দেশে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) তির্যকভাবে কমার পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে। যুদ্ধের কারণে বহু মানুষকে জীবন দিতে হচ্ছে। অবকাঠামো এমনভাবে ধ্বংস হচ্ছে, যার পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
তেলের নিম্নগামী প্রবণতার সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সামঞ্জস্যতা আনতে হবে বলে আইএমএফ সতর্ক করেছে। আন্তর্জাতিক এই সংস্থা বলেছে, উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশগুলো কুয়েত, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে তেলের ওপর নির্ভরতা না কমাতে পারলে দেশগুলোর অর্থনীতি ২০ বছর বা এর কিছু বেশি সময় টিকে থাকতে পারবে।
বিশ্বে বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ সৌদি আরব। বর্তমান অবস্থান ধরে রাখতে হলে তাদের প্রতি ব্যারেল তেল ১০৬ ডলারে বেচতে হবে। তবে দেশটি এরই মধ্যে আর্থিক সম্পদ, যেমন—বন্ড বিক্রি করে নগদ অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা করছে। চলতি বছরের শুরুতে দেশটি ৪০০ কোটি ডলারের বন্ড বাজারে ছেড়েছে।
জ্বালানির দাম পুনর্নির্ধারণকারী দেশগুলোর মধ্যে ইরান, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক সূচকের সঙ্গে স্থানীয় দামের ব্যবধান অনেকটাই কমিয়ে এনেছে। তবে এতে তেমন ফল আসবে না বলে মনে করছে আইএমএফ।

অর্থনীতি ডেস্ক