বাজেট বক্তব্য শুরু করেছেন অর্থমন্ত্রী
জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৩টায় তিনি বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন শুরু করেন।
এর আগে প্রস্তাবিত বাজেট ২০১৯-২০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে অনুমোদন পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে এক বিশেষ বৈঠকে প্রস্তাবিত এ বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়।
এটি দেশের ৪৮তম, আওয়ামী লীগ সরকারের ২০তম এবং অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের প্রথম বাজেট।
এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। ঘাটতি এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮.২ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৫.৫ শতাংশ। ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা হবে। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮ শত দশ কোটি টাকা। দুই লাখ দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকা। অনুনোন্নয়ন ব্যয় ৩ লাখ ২০ হাজার ৪৫১ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে আগামী বাজেট ১২ দশমিক ৬১ শতাংশ বড়। আগামী ৩০ জুন এই বাজেট পাস হবে।
গত বছর সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছিলেন। তিনি টানা ১০ বার জাতীয় বাজেট পেশ করে স্বাধীন বাংলাদেশে রেকর্ড গড়েন।
ভ্যাট আইন কার্যকর ও বেকারদের জন্য ঋণ তহবিল গঠনসহ বেশ কিছু নতুন বিষয় থাকতে পারে এবারের বাজেটে। ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করা হতে পারে ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজার, সঞ্চয়পত্রসহ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে। ঘোষণা থাকতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির।
দেশের জনগণের ওপর নতুন কোনো করচাপ তৈরি করতে চান না অর্থমন্ত্রী। এ জন্য তিনি এবারের বাজেটে করজাল সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেবেন, যাতে করহার না বাড়িয়ে অতিরিক্ত রাজস্ব আহরণ করা যায়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবারের বাজেটের করহারের বিষয়ে একাধিকবার বলেছেন, করের হার বাড়িয়ে কোনো ধরনের করচাপ তৈরি হোক, এটা তিনি চান না। বরং করজাল সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজস্ব আয় বাড়াতে চান।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য কানন কুমার রায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বাসস জানায়, আগামী এক বছরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক করদাতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগ থাকবে এবারের বাজেটে।
বেকারদের জন্য প্রথমবারের মতো ‘উদ্যোক্তা তহবিল’ গঠন করা হচ্ছে। এই তহবিল গঠনের উদ্দেশ্য হলো নতুন উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। এ ছাড়া রপ্তানি বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে আগামী বাজেটে বিশেষ উদ্যোগ থাকতে পারে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসসকে বলেন, তৈরি পোশাকপণ্য রফতানির ক্ষেত্রে যেভাবে প্রণোদনা পেয়ে আসছে, আরো কয়েকটি পণ্যের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে, পুঁজিবাজারের ক্ষতির শিকার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ ঋণ ব্যবস্থার প্রস্তাব থাকবে এবারের বাজেটে।
প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আহরণের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৩ দশমিক ১ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর তিন লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, এনবিআরবহির্ভূত কর ১৪ হাজার ৫০০ কোটি, কর ব্যতীত প্রাপ্তি ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি এবং বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ ধরা হচ্ছে চার হাজার ১৬৮ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটের পরিচালন ব্যয় ধরা হচ্ছে তিন লাখ ১০ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। উন্নয়ন ব্যয় ধরা হচ্ছে দুই লাখ ১১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) দুই লাখ দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকা।
আসন্ন বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। এ ছাড়া নতুন বাজেটে মূল্যস্ফীতির চাপ ৫ দশমিক ৫ শতাংশে রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।