পাট কিনতে বিজেএমসিকে শত কোটি টাকা বরাদ্দ
শুধু কাঁচাপাট কিনতে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনকে (বিজেএমসি) ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণাধীন মিলগুলোর কাঁচাপাট কেনার লক্ষ্যে ১০০ কোটি টাকা ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে অর্থ বিভাগের ‘অপ্রতাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা’ খাত থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে অর্থ বিভাগ থেকে বরাদ্দ এই টাকা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিজেএমসিকে বেশ কিছু শর্ত পরিপালন করতে হবে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈকত চন্দ্র হালদার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শর্তগুলো হলো- ছাড় করা ১০০ কোটি টাকা চলতি অর্থবছরে (২০১৫-১৬) বিজেএমসির কারখানাগুলোর জন্য কাঁচাপাট কেনা ছাড়া অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা যাবে না। এ ছাড়া ছাড় করা অর্থ সুনির্দিষ্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।
ছাড় করা অর্থ ব্যয়ের বিস্তারিত হিসাব সিএ ফার্মকে দিয়ে প্রণীত অডিট রিপোর্ট আগামী তিন মাসের মধ্যে অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।
এ অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে। বিধি বহির্ভূতভাবে কোনো অর্থ পরিশোধ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ছাড় করা অর্থ বিজেএমসির অনুকূলে সরকারি ঋণ হিসেবে গণ্য হবে, যা আগামী পাঁচ বছর পাঁচ শতাংশ সুদে ষান্মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের সাথে বিজেএমসির একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।
আর্থিক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, বিজেএমসি ও অর্থ বিভাগের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে বর্ণিত শর্তাদি যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে। অন্যথায় চলতি বা আগামী অর্থবছরে বিজেএমসিকে অর্থায়নের কোনো প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয় বিবেচনা করবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সক্রিয় উদ্যোগ নিয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে এ আইন বাস্তবায়নে অন্যান্য মন্ত্রণালয় সার্বিক সহযোগিতা করছে। এ আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এরই মধ্যে সারা দেশে কাঁচাপাট, বস্তা বা ব্যাগের মজুদ এবং চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, এ আইন বাস্তবায়নে বছরে প্রায় ৭০ কোটি পাটের বস্তা প্রয়োজন। সে হিসাবে প্রতি মাসে পাঁচ কোটি ২৫ লাখ ব্যাগ লাগবে। এরই মধ্যে দুই মাসের প্রয়োজনীয় বস্তা (৭০০ গ্রাম ওজন) মজুদ রাখা হয়েছে। আর ৭০০ গ্রাম ওজনের ৭০ কোটি বস্তা তৈরি করতে বছরে ২০ থেকে ২২ লাখ বেল কাঁচাপাটের প্রয়োজন। এ জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় গত ৩ ডিসেম্বর অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাচাঁপাট রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছে। পাট অধ্যাদেশ ১৯৬২-এর ৪ ও ১৩ ধারা মোতাবেক যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ সংক্রাস্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর আগে গত ২ নভেম্বর পাট অধ্যাদেশের একই ধারা মোতাবেক ৩ নভেম্বর থেকে এক মাস কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ রাখার প্রজ্ঞাপন জারি করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।

নিজস্ব প্রতিবেদক