জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) ২৩তম সভায় ১৬ হাজার ৮৮৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১৬টি  প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকায় শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

অনুমোদিত ১৬টি নতুন ও সংশোধিত প্রকল্পের মোট ১৪ হাজার ৪১ কোটি ২৭ লাখ টাকা জিওবির অর্থায়নে ব্যয় সংকুলান করা হবে। অবশিষ্ট ৫৯৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা সংস্থার নিজস্ব তহবিল এবং দুই হাজার হাজার ২৫০ কোটি ২৭ লাখ টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ব্যয় সংকুলান রাখা হয়েছে।

সভায় একনেক সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী, মুখ্যসচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিবেরা উপস্থিত ছিলেন ।

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে একনেক সভার বিস্তারিত উল্লেখ করে বলেন, উন্নয়নের জন্য দরকার জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। সে লক্ষ্যে  প্রাথমিক শিক্ষার ভর্তির আওতা বৃদ্ধি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অপরিহার্য। এ লক্ষ্যে একনেক সভায় তিন হাজার ৬৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান -৩য় পর্যায় প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী দরিদ্র পরিবারের শিশুদের ভর্তির হার বৃদ্ধি, উপস্থিতির হার বৃদ্ধি, ঝরে পড়া রোধ এবং প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এ প্রকল্পের অন্যতম মূল লক্ষ্য।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার, ক্ষুদ্র পরিসরে শিল্পায়ন এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে গ্রামীণ জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ছয় হাজার ৯১৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের শতকরা ৮২ ভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় আসবে। 

একনেক সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে ঘোড়াশাল চতুর্থ ইউনিট রি-পাওয়ারিং প্রকল্প, বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর ৭০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণ ও সুরক্ষা এবং ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রকল্প, ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের উৎপাদন পদ্ধতি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরকরণ শীর্ষক প্রকল্প, ইজিসিবি লিমিটেডের আওতায় কক্সবাজার জেলার পেকুয়ায় আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন, ইআইএ এবং সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প, খুলনা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংযোগ সড়ক নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্প, জাতীয় বেতার ভবনে আধুনিক ও ডিজিটাল সম্প্রচার যন্ত্রপাতি স্থাপন শীর্ষক প্রকল্প। বাংলাদেশ গ্রামীণ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প (প্রথম সংশোধিত শীর্ষক প্রকল্প, জামালপুর শহরের নগর স্থাপত্যের পুনরায় সংস্কার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্প, ঢাকায় ইস্কাটনে সিনিয়র সচিব, সচিব এবং গ্রেড-১ কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ফ্লাট নির্মাণ প্রকল্প, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে জরুরি সরঞ্জামাদি সরবরাহ ও সংস্থাপন প্রকল্প, নয়টি পুলিশ সুপার অফিস ভবন নির্মাণ (সিআইডি ও পিবিআই অফিসসহ) প্রকল্প, সিলেট বিভাগ গ্রামীণ অ্যাকসেস সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।

পরিকল্পনা বিভাগের সচিব তারিক-উল ইসলাম এবং পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।