খাদ্যে বিষক্রিয়া প্রজন্মের জন্য হুমকি : শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, জীবাণু নাশক ও জীব-বিজ্ঞানের বিভিন্ন নমুনা সংরক্ষণের জন্য মানব কল্যাণেই ফরমালিনের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাধারণত মাছ, তরকারি ও ফলমূলসহ নানা ধরনের খাদ্যপণ্য বেশি দিন সংরক্ষণে ক্ষতিকারক পদার্থ হিসেবে এ ক্যামিকেলের অপব্যবহার করা হয়। এসব বিষক্রিয়াযুক্ত খাদ্য আগামী প্রজন্মের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘১৬তম এশিয়ান কেমিক্যাল কংগ্রেস’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ফেডারেশন অব এশিয়ান কেমিক্যাল সোসাইটি ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল সোসাইটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘ভোগ্যপণ্যের উৎকর্ষতা, মান নিয়ন্ত্রণ এবং স্থায়িত্বের জন্যও রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহৃত হয়। তবে এতে অতিমাত্রায় রাসায়নিক পদার্থের প্রয়োগ মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ। এ সকল ক্যামিকেল জাতীয় পদার্থ মিশ্রিত খাদ্য গ্রহণ ও ব্যবহারের মাধ্যমে মানবদেহে নানা রকমের কঠিন ও জটিল রোগ ছড়াচ্ছে। এমনকি শিশু খাদ্যেও এসব ক্ষতিকর উপাদান মিশানো হচ্ছে। যা আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিতে পারে।
মন্ত্রী বলেন,‘সম্প্রতি বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের কয়েকটি দেশে ফলমূল, শাক-সবজি, মাছ মাংস ইত্যাদি খাদ্যপণ্য দীর্ঘদিন নষ্টের হাত থেকে রক্ষা করতে একটি গোষ্ঠী ফরমালিনের অপব্যবহার করছে। এর ফলে পুষ্টিযুক্ত খাবার বিষে পরিণত হচ্ছে। যা আমাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর।’
আমির হোসেন আমু আরো বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা ফরমালিন, ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও অন্যান্য রাসয়নিক পদার্থের অপপ্রয়োগ বন্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। ফলমূল ও মাছ-মাংসে রাসায়নিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করতে দেশব্যাপী ফরমালিন ও ক্যালসিয়াম কার্বাইড-বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এসব পদার্থের ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরে সচেতনতা সৃষ্টি করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন শ্রেণির শিল্প কারখানায় কর্মরত রসায়নবিদদের পেশাগত সমস্যার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত যে সব সমস্যা ছিল, এর অধিকাংশ এরইমধ্যে সমাধান করা হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ক্যামিকেল জাতীয় পণ্যের কারখানা ও গুদাম একটি নির্দিষ্ঠ স্থানে সরিয়ে নিতে সরকার কাজ করছে। এটা করা গেলে ক্যেমিকেল জাতীয় পদার্থের দুর্ঘটনা অনেকাংশে রোধ করা যাবে বলেও জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ফেডারেশন অব এশিয়ান কেমিক্যাল সোসাইটি এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল সোসাইটির বিভিন্ন নেতারা বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় চার শতাধিক গবেষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশ নেন।