কাতারে বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম নির্মাণে ‘জোরপূর্বক শ্রম’
কাতারে ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজে শ্রমিকদের জোর করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
বিবিসির এক খবরে বলা হয়, খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অ্যামনেস্টি অভিযোগ করেছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজে যুক্ত শ্রমিকদের নোংরা স্থানে বসবাস করতে বাধ্য করা হচ্ছে। কাজ পেতেও শ্রমিকদের বড় অঙ্কের অর্থ জমা দিতে হয়েছে। কাজ পাওয়ার পর বিভিন্ন অজুহাতে তাদের বেতন কাটা হয় বলে শ্রমিকরা জানিয়েছে। এ ছাড়া কাজে বাধ্য করতে অনেক শ্রমিকের পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মানবাধিকার লঙ্ঘন করে কাতারে বিশ্বকাপের আয়োজন চললেও তা বন্ধে ফিফা ‘পুরোপুরি ব্যর্থ’ বলে অভিযোগ করেছে অ্যামনেস্টি।
এ অভিযোগের বিষয়ে কাতার সরকার অবগত বলে জানিয়েছে। দেশটির প্রশাসন জানিয়েছে, এ ব্যাপারে তদন্ত করা হবে।
কাতার সরকার জানিয়েছে, শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে শ্রম আইনে কৌশলগত পরিবর্তন আনা হয়েছে।
২০১৫ সালে কাতার তাদের ‘কাফালা’ নামে জামিনদার ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার অঙ্গীকার করে। ওই আইনে উল্লেখ রয়েছে, কোনো বিদেশি শ্রমিক নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ছাড়া কর্ম পরিবর্তন করতে পারেব না।
তবে অ্যামনেস্টি বলছে, এ আইনের পুনর্গঠন করা হলেও তা শ্রমিকের জন্য খুব বেশি কল্যাণ বয়ে আনবে না। ফলে অনেক শ্রমিককে ‘জীবন্ত দুঃস্বপ্নে’ জীবনযাপন করতে হবে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব সলিল শেঠি বলেন, ‘সব শ্রমিক অধিকার চায়, ঠিক সময়ে পারিশ্রমিক চায়। আর প্রয়োজন হলে দেশে ফিরতে। তারা চায় মর্যাদা ও সম্মান।’
অ্যামনেস্টি ২৩১ শ্রমিকের সাক্ষাৎকার নিয়েছে, এর মধ্যে বেশির ভাগই দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিক। আর এর মধ্যে ১৩২ জন স্টেডিয়ামে ও ৯৯ জন ক্রীড়া এলাকার সবুজায়নে কাজ করছে।
শ্রমিকরা জানিয়েছে, কাতারে কাজ পেতে নিজ দেশের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা করে দিতে হয়েছে। আর তাদের যে কাজের কথা বলা হয়েছে, কাতারে গিয়ে তারা সে কাজ পায়নি। যে পরিমাণ পারিশ্রমিকের কথা বলা হয়েছিল, তা দেওয়া হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বেতনের অর্ধেক মজুরি দেওয়া হয়।