জিডিপি অর্জন নিয়ে শঙ্কা সিপিডির
চলতি অর্থবছরে (২০১৫-১৬) দেশজ মোট উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটির মতে, চলতি অর্থবছরে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের কথা ছিল তা পূরণ হবে না। আর সম্পদ আহরণে সমস্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আজ রোববার আগামী অর্থবছরের (২০১৬-১৭) বাজেটে সিপিডির সুপারিশমালা শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগামী অর্থবছরের জন্য তিন লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার বাজেটের আভাস দিয়েছেন।
সিপিডির মতে, দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের যে ধারা সেই বিবেচনায় বাজেট আরো বেশি হওয়া দরকার। আর নতুন বাজেটে বিনিয়োগ বাড়ানো উচিত।
সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা মনে করি, বাজেট দেশের স্বার্থে, উন্নয়নের স্বার্থে আরো বড় হওয়া উচিত। আমরা মনে করছি, সম্পদ আহরণের কাঠামোতে বড় ধরনের অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে। আর এই সমস্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।’
জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সরকারের তথ্য অনুযায়ী সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হবে। আর জিডিপির এই অর্জনের ৮০ শতাংশই সরকারি খাতের। প্রবৃদ্ধির এই উচ্চতর মাত্রাকে টেকসই করতে হলে এর গুণগত মান বজায় রাখতে হবে। কারণ আমাদের একদিকে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, অন্যদিকে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমেছে। রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধিও কমেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৪ বছরের সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি, যা বিভ্রান্তিকর।’
সিপিডি ফেলো তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে ৩৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কম হতে পারে।’
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ার কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হঠাৎ করে বেড়েছে বলে মনে করছে সিপিডি। সংস্থাটির মতে, শিল্প খাতে শ্লথ গতি, বিনিয়োগে মন্দাভাব ও কর্মসংস্থান না বাড়ায় বছর শেষে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো কঠিন হবে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের উৎপাদনমুখী খাতগুলোতে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে কি না, সেদিকে নজর দিতে হবে। কর্মসংস্থান হচ্ছে কি না, সেটা দেখতে হবে। বেতন বাড়ানোতে প্রবৃদ্ধিতে প্রতিফল ঘটে।’
পানামা পেপারস প্রসঙ্গে সিপিডি বলছে, বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে অর্থপাচারের বিরুদ্ধে সরকারের শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আর্থিক খাতের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যেটা আছে, তাদের আরো বেশি সক্রিয় হয়ে এসব বিষয়কে বিবেচনা করা উচিত এবং সেখানে উন্মুক্ত শুনানি করা উচিত।’
এ ছাড়া আগামী অর্থবছরে বাজেটের কাঠামোর গুণগত মানোন্নয়ন এবং ‘বাস্তবায়নযোগ্য’ বাজেট প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি।