জাপানকে অটোমোবাইল খাতে বিনিয়োগের আহ্বান
বাংলাদেশে অটোমোবাইলসহ উদীয়মান ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) শিল্প খাতে জাপানি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
আজ বৃহস্পতিবার শিল্প মন্ত্রণালয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবের সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান শিল্পমন্ত্রী।
জাপানের উচ্চ প্রযুক্তির শিল্প-কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় সনি করপোরেশনের কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এটি বাংলাদেশে স্থানান্তরের সুযোগ আছে। এ কারখানায় কর্মরত বেশির ভাগ শ্রমিক বাংলাদেশি ছিল। বাংলাদেশে এটি স্থানান্তর হলে সহজেই দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যাবে।’
শিল্পমন্ত্রী কর্ণফুলী পেপার মিলস্, রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকল, টিএসপি সার কারখানাসহ রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন কারখানার খালি জায়গায় যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে শিল্প স্থাপনে এগিয়ে আসতে জাপানের রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘এককভাবে জাপান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে জাপান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। জাপানের সহায়তায় এরইমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি (কাফকো), দ্বিতীয় ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি-২), বিএসটিআইয়ের গবেষণাগার আধুনিকায়নসহ বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।’ এ সময় বাংলাদেশে অটোমোবাইলসহ উদীয়মান এসএমই শিল্প খাতে জাপানি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ বাড়ানোরও পরামর্শ দেন শিল্পমন্ত্রী।
বৈঠকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করে জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও জাপানের অর্থনীতি ধারাবাহিকভাবে টেকসই উন্নয়নের পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে।’
ওয়াতানাবে আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ ও জাপানের যৌথ বিনিয়োগে স্থাপিত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড বাংলাদেশের এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে।’ প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে নির্ধারিত সম্পূরক শুল্ক শতকরা ৪৫ ভাগ থেকে কিছুটা কমানোর প্রস্তাব করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে আরো বলেন, ‘বহুজাতিক ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী কারখানা কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরির আদলে বাংলাদেশ, জাপান ও ইরানের উদ্যোগে ইরানে একটি ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব করেন। এ সার কারখানা স্থাপনের জন্য জাপান সরকার সম্মত রয়েছে। এটি স্থাপিত হলে, সংশ্লিষ্ট তিন দেশই আর্থিকভাবে লাভবান হবে।’
এ প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘ইরানে বহুজাতিক বিনিয়োগে ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপনের বিষয়টি কায়রোতে অনুষ্ঠেয় পঞ্চম ডি-৮ শিল্পমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনা হবে।’
রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘জাপান সরকার তাঁর এ সফরের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এ সফরে পাবলিক প্রাইভেট ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডায়ালগের আয়োজন করা হবে। এর ফলে বাংলাদেশের উদীয়মান খাতগুলোতে জাপানি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ বাড়বে।’ তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে জাপান সরকারের সর্বাত্মক সহায়তা থাকবে বলে উল্লেখ করেন।
বৈঠকে শিল্প সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, শিল্প মন্ত্রণালয় ও জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।