সুইফট কর্মীর ‘ভুলে’ রিজার্ভ চুরি

বিশ্বব্যাপী আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বার্তা সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান সুইফটের এক কর্মীর গাফিলতির কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংকের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। এ কারণে হ্যাকাররা রিজার্ভ চুরির সুযোগ পায়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মাদ শাহ আলম এ অভিযোগ করেছেন।
শাহ আলম রিজার্ভ চুরির ঘটনায় তদন্তকারী দলের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রিজার্ভ চুরির ঘটনার তিন মাস আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফটের সঙ্গে রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) ব্যবস্থার সংযোগ স্থাপন করা হয়। নতুন এই লেনদেন ব্যবস্থার সংযোগ স্থাপনে কাজ করেন সুইফটের এক কারিগর। তবে তিনি সুইফটের নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে এই কাজ সম্পন্ন করেননি। এই ভুল পদক্ষেপেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা অধিকতর দুর্বল হয়ে পড়ে।
ঢাকায় রয়টার্সকে শাহ আলম বলেন, ‘আমরা অনেক ফাঁকফোকর খুঁজে পেয়েছি। এই পরিবর্তনই (সংযোগ পদ্ধতি) বাংলাদেশ ব্যাংককে অধিকতর ঝুঁকিতে ফেলে।’
শাহ আলম ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্তা পাঠানো প্ল্যাটফর্ম সুইফটের সঙ্গে আরটিজিএসের সংযোগ স্থাপনের সময় সুইফট কর্মী ভুল পদ্ধতি গ্রহণ করেন। ওই সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ওই কর্মীকে সুইফটের নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কাজ করতে দেখা যায়নি। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুইফটের বার্তা ব্যবস্থায় পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে যে কারো পক্ষে বার্তা পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়। এমনকি দূর থেকেও এটি করার ক্ষেত্র তৈরি হয়। এখানে কোনো ফায়ারওয়াল ছিল না। শুধু অপূর্ণাঙ্গ (রুডিমেন্টারি) সুইচ ছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘একটি সংযোগ স্থাপনের পর তাদের বার্তা পাঠানোর ব্যবস্থায় কোনো দুর্বলতা আছে কি না, তা খোঁজ নেওয়ার দায়িত্ব সুইফট অবশ্যই এড়াতে পারে না।’
সুইফটের প্রধান মুখপাত্র নাতাশা ডি টেরান বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তার অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযোগের ব্যাপারে রয়টার্সের পক্ষ থেকেও স্বতন্ত্রভাবে কোনো তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। তবে যদি এ ঘটনা ঘটে থাকে, তবে বিশ্বব্যাপী আর্থিক বার্তা সেবাদানকারী সুইফটের মেরুদণ্ড ভেঙে পড়বে।