রাজস্ব ও গ্রাহক দুটোই বেড়েছে গ্রামীণফোনের

বেসরকারি টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আয় করেছে পাঁচ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। যা গত বছর এ সময়ের তুলনায় শতকরা ৮ দশমিক ১ ভাগ বেশি। এ ছাড়া এ সময়ে গ্রামীণফোনের বেড়েছে আরো দুই লাখ গ্রাহক। বর্তমানে গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যা পাঁচ কোটি ৬৯ লাখ।
আজ সোমবার রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জিপি হাউসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় নতুন গ্রাহক ও প্রদত্ত সেবা থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব আয় বেড়েছে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। এতে ডাটা থেকে আয় করা রাজস্বের বড় অবদান আছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ডাটা রাজস্ব বেড়েছে ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ডাটার ব্যবহারও বেড়েছে ১৮৬ দশমিক ৪ শতাংশ। এই সময় ভয়েস থেকে অর্জিত রাজস্ব বেড়েছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়ে রাজস্ব আয় হয়েছে দুই হাজার ৮১০ কোটি টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, চলতি বছরের প্রথম অর্ধে গ্রামীণফোনে যুক্ত হয় আরো দুই লাখ নতুন গ্রাহক। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যা পাঁচ কোটি ৬৯ লাখ। গত বছরের তুলনায় তা ৭ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং এতে সিম মার্কেট শেয়ার হয়েছে ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ। ইন্টারনেট গ্রাহক যোগ হয়েছে ৬১ লাখ। এতে মোট ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ১৮ লাখ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছরের প্রথমার্ধে থ্রিজি বিস্তার, টুজি বিস্তার ও ধারণক্ষমতা বৃদ্ধিতে গ্রামীণফোন এক হাজার ৩৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এদিকে দেশের বৃহত্তম করদাতা গ্রামীণফোন একই সময়ে কর, ভ্যাট, শুল্ক এবং লাইসেন্স ফি আকারে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে তিন হাজার ৩১০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানের মোট রাজস্ব আয়ের ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ।
গ্রামীণফোন লিমিটেডের ‘বোর্ড অব ডিরেক্টরস’ গত ৩০ জুনে সমাপ্ত অর্ধবছরের অন্তর্বর্তী নিট মুনাফা এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত সংরক্ষিত আয়ের ওপর ভিত্তি করে পরিশোধিত মূলধনের শতকরা ৮৫ ভাগ (প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়ারের বিপরীতে ৮.৫০ টাকা) অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এই লভ্যাংশ গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্ধবছরের কর-পরবর্তী নিট মুনাফার শতকরা ১০৭ ভাগ। এই লভ্যাংশ রেকর্ড ডেট ৮ আগস্ট ২০১৬-এ যাঁরা শেয়ারহোল্ডার থাকবেন, তাঁদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া সময়ানুযায়ী বিতরণ করা হবে।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাজীব শেঠি বলেন, ‘গ্রামীণফোন অত্যন্ত সফলভাবে ২০১৬ সালের প্রথম অর্ধ পার করেছে। এ সময় ডাটা গ্রাহক এবং এর ব্যবহার দুটোই বেড়েছে। আমরা ১০ হাজার থ্রিজি বিটিএস স্থাপন শেষ করেছি এবং এর ফলে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ থ্রিজির আওতায় এসেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ভয়েস থেকে অর্জিত রাজস্ব ও মিনিট ব্যবহার বাড়ছে। যা আমাদের আগামীতে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে সাহায্য করবে।’
গ্রামীণফোনের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) দিলীপ পাল বলেন, ‘২০১৬ সালের প্রথম অর্ধে আমরা দুই অঙ্কের গ্রাহক ও ট্রাফিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। আমাদের সহজ গ্রাহককেন্দ্রিক পণ্য এবং থ্রিজি সম্প্রসারণে অব্যাহত বিনিয়োগই এই প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে গ্রামীণফোনের বোর্ড অব ডিরেক্টর পরিশোধিত মূলধনের ৮ দশমিক ৫ শতাংশ অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।’