ব্যবসায় ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের ধারণা দেবে পিএমআই

প্রথমবারের মতো দেশে বেসরকারি উদ্যোগে চালু করা হয়েছে পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স (পিএমআই)। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতের জন্য ব্যবসায় কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে সেই ধারণা পাওয়া যাবে পিএমআইয়ের মাধ্যমে।
রাজধানীর গুলশানে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এমসিসিআই কার্যালয়ে বাংলাদেশে পিএমআই চালু করা উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স (এমসিসিআই) ও গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ (পিইবি) যৌথভাবে এখন থেকে এ সূচক বা টুল প্রকাশ করবে। এ সূচক তৈরিতে সহায়তা করবে যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)।
এদিন অনুষ্ঠানে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পিইবির চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিইবির অর্থনীতিবিদ ও সিনিয়র ম্যানেজার হাসনাত আলম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার ম্যাট ক্যানেল ও এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতি মাসে এ সূচক তৈরি করা হবে। অতীতের তথ্য-উপাত্ত নয়, বর্তমান তথ্য-উপাত্তকে পর্যালোচনা করে তৈরি করা হবে এ সূচক। যেখানে নতুন ক্রয়াদেশ, উৎপাদন, কর্মসংস্থান, সরবরাহ এবং ইনভেন্টরির মতো বিভিন্ন বিষয় সংযুক্ত থাকবে। এসব বিষয় ব্যবসা বা অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি এবং সম্ভাব্য খাতভিত্তিক বিস্তারিত পরিকল্পনা নিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে কৃষি, উৎপাদন, সেবা ও নির্মাণ খাতের সূচক প্রকাশ করা হবে।
সূচকটির বিস্তারিত তুল ধরে মাশরুর রিয়াজ জানান, পিএমআই ধারণাটি বিশ্বের অন্যান্য দেশে পুরোনো হলেও বাংলাদেশের জন্য সম্পূর্ণ নতুন। যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৪৯ সালে এটি চালু হয়। এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে এ সূচক ব্যবহার করা হয়। মূলত গুরুত্বপূর্ণ শিল্প খাতের চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত ও মোকাবেলা করে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণে এটি ব্যবহার হচ্ছে।
ম্যাট ক্যানেল বলেন, অনেক আগে থেকেই পিএমআই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহার হয়ে আসছে। বাংলাদেশে নতুন হলেও অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করার জন্য এটি খুব জরুরি। এলডিসি থেকে কীভাবে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া যায় সেই বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করবে এ সূচকটি।
মূল প্রবন্ধে হাসনাত আলম বলেন, বাংলাদেশে এটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুরু হয়েছে। গত নভেম্বর থেকে কাজ শুরু হয়। আগামী মার্চ নাগাদ প্রথম প্রতিবেদনটি প্রকাশ করার চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি সম্পূর্ণ নতুন ধারণা। ফলে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের তথ্য প্রকাশ করতে চাইবে না। তবে সূচক তৈরির জন্য যেসব তথ্য সংগ্রহ করা হবে, সেগুলো কোনো কোম্পানির জন্য নেতিবাচক হবে না। বরং তাদের সিদ্ধান্ত নিতে ভূমিকা রাখবে।
এমসিসিআইর সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, ব্রিটিশ সরকারের এই সহযোগিতা দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশের বোঝাপড়া, বিশ্লেষণ করা এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে নির্দেশক হিসাবে কাজ করবে। পিএমআই বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, বাংলাদেশের প্রধান শিল্পখাতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।