স্বচ্ছতার মাপকাঠিতে আগামীতে শীর্ষে থাকতে চাই : পারভেজ তমাল
স্বপ্ন বাস্তবায়নে আপনার দুয়ারে- এই স্লোগানে অনাড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিষ্ঠার ১১বছর পূর্তি উদযাপন করেছে এনআরবিসি ব্যাংক। মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে বিশেষ এই দিনে ইফতার সামগ্রী ক্রয় ও ঈদ উৎসবের আনন্দ বাড়াতে সারাদেশের ১১ হাজার এতিম, দুস্থ, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষদের প্রত্যেককে এক হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
দোয়া মাহফিলে ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল বলেন, আমরা ১১ বছর অতিক্রম করে ১২ বছরে পদার্পন করছি। আমাদের সবসময় চিন্তুা ছিল সর্বোত্তম ও নিরাপদ ব্যাংকিং সেবা। আগের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাপকাঠিতে আগামীতে আমরা সবার শীর্ষে থাকতে চাই। এছাড়া গ্রামের মানুষ যেন শহরমুখী না হয় তার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। গ্রামেই ঘরে বসে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি।
ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু বলেন, প্রবাসী হিসেবে আমাদের যে অভিজ্ঞতা, আমরা দেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাতে চেয়েছিলাম। ব্যাংক প্রতিষ্ঠার এটাই ছিল উদ্দেশ্য। প্রত্যন্ত অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা আমাদের দায়িত্বেও মধ্যে পড়ে।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও গোলাম আউলিয়া বলেন, এনআরবিসি ব্যাংক গ্রাম—বাংলার গণমানুষের ব্যাংক।যেখানে বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সম্ভব আমরা সেখানে বিনিয়োগ করছি। ব্যাংকিং সেবাকে মানুষের দৌঁড়গোড়ায় পৌছে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আমরা রিয়েলটাইম ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে ফিনটেকের উপর জোর দিয়েছি। সাধারণ মানুষ খুব দ্রুত ক্ষুদ্রঋণ পাচ্ছেন। সেই জায়গা থেকে আমরা ন্যানো ক্রেডিটের দিকে যাচ্ছি। আমাদের মূল লক্ষ্য প্রতিবছর ১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমাম, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, পরিচালক ওলিউর রহমান, এ এম সাইদুর রহমান, লকিয়ত উল্লাহ, মোহাম্মদ নাজিম, স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান এয়ার চিফ মার্শাল (অব:) আবু এসরার, স্বতন্ত্র পরিচালক ড. খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, ড. রাদ মজিব লালন সহ ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এদিকে গত ২০১৩ সালের ২ এপ্রিল ৫৩ জন প্রবাসী উদ্যোক্তাদের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় এনআরবিসি ব্যাংক। পথচলায় ১১ বছর পার করে ১২ বছরে পদার্পণ করেছে ব্যাংকটি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন আর্থিক সূচকে শীর্ষে উঠে এসে নতুন নতুন মাইলফলক স্থাপন করছে এনআরবিসি ব্যাংক। ব্যাংকটি গ্রামের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য গৃহীত কর্মসূচির মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে। ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত উপশাখা স্থাপনের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদেরকে বিনাজামানতে ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৮০ হাজার মানুষ এনআরবিসি ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠেছেন। এসব জনকল্যাণমুখী কর্মকাণ্ডের জন্য সমসাময়িক ব্যাংকগুলোর তুলনায় সবার শীর্ষে। নতুন প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করেছে এনআরবিসি ব্যাংক। নতুন প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর মধ্যে শাখা—উপশাখার সবার শীর্ষে এনআরবিসি ব্যাংক। কোন কোন ক্ষেত্রে আগের প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর তুলনায় অনেক এগিয়ে এনআরবিসি ব্যাংক।
আর্থিকভিত্তিগুলো অনেক শক্তিশালী হয়েছে নতুন পথচলায়। গত ২০১৭ সালে আমানত ছিল চার হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। ২০২৩ সাল শেষে তা প্রায় চারগুণেরও বেশি বেড়ে হয়েছে ১৭ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা। এভাবে ঋণ বিতরণ বেড়েছে তিনগুণেরও বেশি। ২০১৭ সালে ঋণ ছিল চার হাজার ৩০০ কোটি টাকা, আর ২০২৩ সাল শেষে হয়েছে ১৪ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা। ব্যাংকের কর্মীর সংখ্যা ৬১৭ জন থেকে ছয়গুণ বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ৮৩২ জন। ২০১৭ সালে শাখার সংখ্যা ছিল মাত্র ৬১টি। ২০২৩ সাল শেষে শাখা—উপশাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০০টি।