সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আসছেন সরকারিতে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা
পেনশন সুবিধা পান এমন সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে আগামী বছরের ১ জুলাই থেকে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা সর্বজনীন পেনশনের আওতায় পেনশন পাবেন। আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে দেওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ কথা জানিয়েছেন।
লিখিত বক্তৃব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৮ বছরের বেশি বয়সের জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তার কাঠামোর আওতায় আনতে গত বছরের ১৭ আগস্টে চালু হওয়া সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতায় চারটি পৃথক স্কিম চালু রয়েছে। এর মধ্যে ‘প্রবাস’ স্কিমটি প্রবাসীদের জন্য। ‘প্রগতি’ স্কিম চালু করা হয়েছে বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য। অনানুষ্ঠানিক খাত, অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য রয়েছে ‘সুরক্ষা’। আর ‘সমতা’ স্কিম নিম্নআয়ের মানুষের জন্য।
তিনি বলেন, পেনশন সুবিধা পান এমন সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হবে। ইতোমধ্যে স্বায়ত্ত্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের এ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের আগামী ২০২৫ সালের জুলাই থেকে এ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করা হবে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার তহবিল পরিচালন ব্যয় সরকার বহন করায় এবং বিনিয়োগ মুনাফা জমাকারীদের মধ্যে বিভাজন হওয়ায় এটি হবে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় পেনশন স্কিম।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতায় ‘প্রত্যয়’ নামে একটি স্কিম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ স্কিমের আওতায় রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত এবং সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের নতুন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পেনশন পাবেন। এক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তবে, বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা এমনকি আগামী জুলাইয়ের আগে কেউ যোগদান করলে, তারাও বিদ্যমান নিয়মে পেনশন পাবেন।
এদিকে ‘প্রত্যয়’ পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা (দুটির মধ্যে যেটি কম) বেতন থেকে কেটে নেবে এবং সমপরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা প্রদান করবে। অতপর উভয় অর্থ উক্ত প্রতিষ্ঠান ওই কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিপরীতে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের অ্যাকাউন্টে জমা দেবে। জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ও মেয়াদের ভিত্তিতে অবসরকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী পেনশন ভোগ করবেন।
তবে, সরকারের এ সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তাদের দাবি, সর্বজনীন পেনশন কার্যকর করা হলে অন্যান্য সরকারি চাকরিজীবীদেরও এর আওতায় নিয়ে আসা হোক। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশনের আওতাভুক্ত করার ঘোষণা দিলেও এক্ষেত্রে চাঁদা কে দেবে কিংবা পেনশন সুবিধার হার কেমন হবে সেসব বিষয় উল্লেখ করেননি।