লেনদেন শর্ত বাতিলসহ করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাব

দেশে কার্যকরী করহার অতি উচ্চ। যা ক্ষেত্রবিশেষে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ হয়ে যায়। গত কয়েক অর্থবছরে শর্তসাপেক্ষে করপোরেট করহার কমানো হলেও নগদ লেনদেনের শর্তের কারণে বড় ও মাঝারি কোম্পানির পক্ষে এই শর্ত পালন করা কঠিন। তাই লেনদেন শর্ত বাতিলসহ করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাব করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)।
অপরদিকে একক ভ্যাট হারের প্রস্তাব করেছে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)। তাদের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর কার্যালয়ে আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রাক–বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে দেশের দুই চেম্বারের নেতারা এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। এসময় কর ব্যবস্থায় অটোমেশনের ওপর জোর দেন এফআইসিসিআইয়ের সভাপতি ও ইউনিলিভার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার।
আলোচনায় আবদুর রহমান খান বলেন, ‘সব ব্যবসায়ী একমত হলে, আমরা একক ভ্যাট হার করে দিতে পারি। প্রয়োজনে একক ভ্যাট হার কমাব। একক ভ্যাট হলে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান হিসাব সংরক্ষণে জবাবদিহির মধ্যে আসবে।’
আলোচনায় এমসিসিআইয়ের পক্ষে বাজেট সাতটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি কামরান টি রহমান। এগুলো হলো—কোম্পানির করহার যৌক্তিক করা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য বিশেষ কর সুবিধা, কর নীতি ও প্রশাসন আলাদা করা, কর ব্যবস্থাপনা অনলাইনভিত্তিক মাধ্যমে সহজ করা, আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র (পিএসআর) প্রদর্শনের ক্ষেত্রে জটিলতা দূর করা, ৬ বছরের অধিককাল পর্যন্ত পরিসম্পদ কর বিবেচনা করা এবং অনুমোদিত ফান্ডগুলোর ওপর করারোপ করা।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় এমসিসিআইয়ের সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে রপ্তানি খাত। বাড়তি শুল্ক আরোপ হবে রপ্তানি খাতের ওপর। তাই দেশীয় শিল্প বিকাশে এনবিআরকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। আলোচনায় মেট্রো চেম্বারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহসভাপতি সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম, সিমিন রহমান, আনিস এ খান, পরিচালক আদিব এইচ খান, উজমা চৌধুরী প্রমুখ।
একক ভ্যাট হারের প্রস্তাব করেছে এফআইসিসিআই। সংগঠনটি ২০২৭ সালের মধ্যে একক ভ্যাট হার ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে। একই অনুষ্ঠানে এফআইসিসিআইয়ের পক্ষে বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদ স্নেহাশিস বড়ুয়া। তিনি বলেন, যেসব খাতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আছে, তা ২০২৭ সালের মধ্যে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা যেতে পারে। আবার যেসব খাতের ভ্যাট ১০ শতাংশের নিচে, সেসব খাতের হার ১০ শতাংশ করা যেতে পারে। এতে কার্যকর ভ্যাটের হার কমে যাবে। প্রতিষ্ঠানের হিসাব ব্যবস্থার উন্নতি হবে।