শিল্পের নিরাপত্তা-সম্প্রসারণসহ ১৪ দফা ইশতেহার ফোরামের

পোশাক শিল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও বাজার সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতিসহ ১৪ দফা নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছে বিজিএমইএ (বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি) নির্বাচন কেন্দ্রিক জোট ফোরাম। বিজিএমইএর নেতৃত্ব পেলে এসএমই ও নন-বন্ডেড শিল্পকে সহায়তা, রুগ্ণ শিল্পের জন্য এক্সিট পলিসি প্রণয়ন এবং ট্যারিফ যুদ্ধ মোকাবিলায় সরকারের সঙ্গে দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে তারা।
আজ শনিবার (২৪ মে) রাতে রাজধানীর উত্তরার বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত প্রার্থী পরিচিতি অনুষ্ঠানে ফোরাম তাদের নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ করে। প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান বাবু এই ইশতেহার ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে মাহমুদ হাসান খান বলেন, পোশাক শিল্প শুধু ব্যবসা নয়, এটি আমাদের শ্রম, আত্মত্যাগ আর স্বপ্নের প্রতিফলন। তবে আজকের বাস্তবতায়, বিজিএমইএর ভূমিকা কেবল সার্টিফিকেট বা কাগজপত্র সরবরাহে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। প্রয়োজন এমন নেতৃত্ব, যারা সমস্যার গভীরে গিয়ে সমাধান আনবে। বিজিএমইএকে দায়িত্ব নিতে হবে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে।
ইশতেহারে ফোরাম বলছে, আজকের এসএমই কারখানা, আগামী দিনের বড় শিল্প। তাই তারা নেতৃত্ব পেলে ছোট, মাঝারি ও নন বন্ডেড কারখানার দিকে বাড়তি মনোযোগ দেবে। তারা কারখানা মালিক ও শ্রমিক সবার স্বার্থ দেখতে চায়। আর সবার স্বার্থ রক্ষা করেই একটি এক্সিট পলিসি তৈরিতে সরকারের সঙ্গে কাজের কথা বলা হচ্ছে এতে।
মালিকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতিতে জোটটি বলছে, মালিকদের বিপদে আপদের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গড়ে তোলা হবে। ট্যারিফ যুদ্ধ মোকাবিলা, এলসিডি উত্তরণে সরকারের সঙ্গে নীতি প্রণয়ন ও কূটনৈতিক তৎপরতা হাতে নেয়ার কথাও বলছে তারা। আর বিশেষ পদক্ষেপ থাকবে, কাস্টমস ও ব্যাংক সমস্যা সমাধানে।
১৪ দফা ইশতেহারে বলা হয়, পোশাক খাতের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, বুয়েটকে বিজিএমইএর অন্তর্ভুক্তকরণ, এসএমই ও নন বন্ডের শিল্পকে সহায়তা, ক্রেতাদের থেকে ন্যায্য মূল্য আদায় ব্যবস্থা, নতুন বাজার সম্প্রসারণ ও অঞ্চলভিত্তিক ক্রাইসিস মোকাবিলা সেল গঠনের কথা। ক্রেতাদের অনৈতিক চাপের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফোরাম।
ফোরাম প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, আমরা সদস্যদের সঙ্গে যুক্ত থেকে একটি স্বচ্ছ ও কর্মক্ষম বিজিএমইএ গড়ে তুলতে চাই। দায়িত্ব পেলে পরিচালকদের নির্ধারিত কারখানার দায়িত্ব দেওয়া হবে, যাতে কারখানাগুলোর বিপদে-আপদে পাশে থাকতে পারে। পাশাপাশি আমাদের শ্রম শক্তিকে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত করতে হবে।
এদিকে সাধারণ সদস্যদের সামনে ফোরাম প্রার্থীদের পরিচিতি অনুষ্ঠানও সম্পন্ন হয়েছে। বিজিএমইএর উদ্যোগে ফোরাম প্যানেল লিডার তার সহযোদ্ধাদের সাধারণ সদস্যদের সামনে পরিচয় করিয়ে দেন।
ফোরাম বলছে, আগামী দিনের পোশাক খাতের চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় রেখে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন উদ্যোক্তা, দূরদর্শী ও তরুণদের বাছাই করে নিয়েছে জোটটি। প্রার্থী হিসেবে এসএমই উদ্যোক্তা যেমন রয়েছে, আবার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নারী নেতৃত্বকেও। ফোরাম বিজিএমইএর হারানো সুনাম ও ভাবমূর্তি ফেরাতে পদক্ষেপ নেবে দায়িত্ব পেলে। ঢাকায় ২৬টি, চট্টগ্রামে ৯টি সহ ৩৫ পদে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছে তারা, ১-৩৫ ব্যালট নম্বর পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফোরাম সভাপতি আব্দুস সালাম, মহাসচিব ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী, প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ফয়সাল সামাদসহ ফোরাম প্রার্থীরা। নির্বাচনি বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল এতে সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহা, আনোয়ার উল আলম চোধুরী পারভেজ।