নির্ভুল রিটার্নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন চায় এনবিআর
করদাতাদের নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিলের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন চাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। যেখানে করদাতারা তাদের কাঙ্খিত চার ধরনের তথ্য পান। যাতে করদাতার আয়কর রিটার্ন দাখিলের আগে ব্যাংকে ব্যাংকে দৌড়াতে না হয় বলে জানালেন এনবিআরের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
আজ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনের সম্মেলন হলে ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য (মূসক নীতি) আজিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও এনবিআর ১০ ডিসেম্বর ভ্যাট দিবস ও ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর ভ্যাট সপ্তাহ পালন করবে। নিবন্ধনকে গুরুত্ব দিয়ে এ বছরের ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘সময়মত নিবন্ধন নিব, সঠিকভাবে ভ্যাট দিব’।
করদাতাদের ব্যাংক একাউন্টের এক্সেস নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে জানিয়ে আবদুর রহমান খান বলেন, করদাতাদের ব্যাংক একাউন্টের লেনদেন তথ্য এনবিআর চাচ্ছে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, আয়কর রিটার্ন দাখিলের আগে ব্যাংক সনদের জন্য ব্যাংকে ব্যাংকে দৌড়াতে হচ্ছে করদাতাদের। এরপরও রিটার্ন দাখিলে অনেকেই ভুল করছেন। এ জন্য এনবিআর অফিসে অনেক করদাতাকে ডাকা হচ্ছে। এতে অনেকে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাই তাদের হয়রানি রোধসহ নির্ভুল রিটার্ন দাখিল স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন চাচ্ছে এনবিআর। যেখানে ব্যাংক একাউন্টের চার ধরনের তথ্য পাবে করদাতারা। তথ্যগুলো হলো– ৩০ জুন করদাতাদের একাউন্টে কি পরিমাণ টাকা জমা আছে, বছরে কত টাকা মুনাফা পেল, মুনাফা থেকে কত টাকা কর আদায়সহ বছরে ব্যাংক কি পরিমাণ চার্জ রাখা হয়েছে। এই চার তথ্য আয়কর রিটার্ন করার সময় স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় এসব তথ্য পাবে করদাতারা। কোথায়ও দৌড়াতে হবে না। কারও কাছে যেতেও হবে না তাদের। তবে এটা নিশ্চিত থাকুন, কোনো রাজস্ব কর্মকর্তা করদাতাদের ব্যাংক একাউন্টের তথ্যসহ লেনদেন দেখার এক্সেস পাবে না।
ভবিষ্যতে কেউ চাইলেও ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসা করতে পারবেন না মন্তব্য করে আবদুর রহমান খান বলেন, দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিংহভাগ এখনও ভ্যাট নিবন্ধনের বাইরে আছে। দেশব্যাপী বিশেষ নিবন্ধন ক্যাম্পেইনে এবার এক লাখ নতুন প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনার লক্ষ্য আছে। পর্যায়ক্রমে ভ্যাট নিবন্ধন ৩০ থেকে ৪০ লাখে উন্নীত করা হবে। বর্তমানে দেশে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছয় লাখ ৪৪ হাজার।
গত অর্থবছরে এনবিআর মোট আদায়ের ৩৮ শতাংশ ভ্যাট হতে আদায় করা হয়েছে জানিয়ে আবদুর রহমান খান বলেন, চলতি কর বছরের প্রথম পাঁচ মাসে গত কর বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ শতাংশ বেশি ভ্যাট আদায় হয়েছে।
শিগগিরই এক ক্লিকেই ভ্যাট দেওয়ার পদ্ধতি চালু হবে জানিয়ে আবদুর রহমান খান বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য এবারে লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। তবে কোনো অবস্থায় যেন হয়রানি বা জুলুম করা না হয়, সেটা নিশ্চিত করব আমরা। যারা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন, তাদের কাছ থেকেই আমরা রাজস্ব আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এবারও ভ্যাট পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, সামনে এই পুরস্কার দেওয়ার ব্যপারে নীতিমালা নিয়ে কাজ হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক