গতবারের চেয়ে বেড়েছে জিপিএ-৫
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে আজ রোববার। এবার সর্বমোট ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৩ লাখ ছয় হাজার ৭১৮ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। গতবার পেয়েছিল এক লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। গতবারের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছে ২৭ হাজার ৩৬২ জন।
আজ রোববার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৯ হাজার ২৩৩ জন। এদের মধ্যে ছেলে ২৯ হাজার ৯৬ জন আর মেয়ে ৩০ হাজার ১৩৭ জন। গতবার এই বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫৭ হাজার ৯২৬ জন।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২ হাজার ৮০০ জন। এদের মধ্যে ছেলে ১৮ হাজার ৪০০ জন আর মেয়ে ১৪ হাজার ৪০০ জন। গতবার এ বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২৬ হাজার ৫৬৮ জন।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ১৫৩ জন। এদের মধ্যে ছেলে পাঁচ হাজার ৩৯৬ জন আর মেয়ে ৮ হাজার ৭৫৭ জন। গতবার এ বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯ হাজার ৩৬৪ জন।
যশোর শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৮৭৮ জন। এদের মধ্যে ছেলে আট হাজার ৭০৭ জন আর মেয়ে ১২ হাজার ১৭১ জন। গতবার এ বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১২ হাজার ৮৯২ জন।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩ হাজার ৭২০ জন। এদের মধ্যে ছেলে ছয় হাজার ৫০ জন আর মেয়ে সাত হাজার ৬৭০ জন। গতবার এ বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১২ হাজার ১৪৩ জন।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৯৭১ জন। এদের মধ্যে ছেলে তিন হাজার ৪৮১ জন আর মেয়ে ছয় হাজার ৪৯০ জন। গতবার এ বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল পাঁচ হাজার ৫৬৮ জন।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে চার হাজার ৭৩১ জন। এদের মধ্যে ছেলে দুই হাজার ১৯৩ জন আর মেয়ে দুই হাজার ৫৩৮ জন। গতবার এই বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল চার হাজার ২৪২ জন।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ হাজার ৩৪৯ জন। এদের মধ্যে ছেলে সাত হাজার ২৩২ জন আর মেয়ে আট হাজার ১১৭ জন। গতবার এই বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৪ হাজার ৮৭১ জন।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে সাত হাজার ৬৮৭ জন। এদের মধ্যে ছেলে তিন হাজার ৫৬৪ জন আর মেয়ে চার হাজার ১২৩ জন। গতবার এই বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১০ হাজার ৪০ জন।
এ ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে চার হাজার ৮৭২ জন। এদের মধ্যে ছেলে দুই হাজার ৭৮৬ জন আর মেয়ে দুই হাজার ৮৬ জন। গতবার এ বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল চার হাজার ৪৮ জন।
অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে পাঁচ হাজার ৭৭৫ জন। এদের মধ্যে ছেলে তিন হাজার ৮৫৮ জন আর মেয়ে এক হাজার ৯১৭ জন। গতবার এ বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল চার হাজার ১৪৫ জন।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে গত ২ ডিসেম্বর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারা দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রে একযোগে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালের পরীক্ষা হয়নি। ওই বছর শিক্ষার্থীদের অটোপাস দেওয়া হয়েছিল।
এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত (কাস্টমাইজড) সিলেবাসে নেওয়া হয়। ১০০-এর পরিবর্তে বিষয়ভিত্তিক ৫০ নম্বরের অনুষ্ঠিত হয় পরীক্ষা।
ফলাফল অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষার বিষয়ে আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করা জরুরি। যেসব দেশ উন্নত হয়েছে, তারা সবাই কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েই উন্নত হয়েছে। উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই গবেষণায় জোর দিতে হবে।’
যেভাবে জানা যাবে ফলাফল
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে,এবারও ঘরে বসেই মোবাইল ফোনে ও ওয়েবসাইট থেকে ফলাফল জানা যাবে। শিক্ষা বোর্ড থেকে ফল প্রকাশ হওয়ার পর তা এসএমএসের মাধ্যমে জানা যাবে। প্রতি এসএমএসের জন্য ২ টাকা ৬৭ পয়সা খরচ হবে।
এসএমএসে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের ফল পেতে HSC<>বোর্ড<>রোল<>সাল লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠিয়ে দিতে হবে। উদাহরণ : HSC DHA 123456 2022 টাইপ করে এসএমএস পাঠিয়ে দিন ১৬২২২ নম্বরে। এসএমএস পাঠালেই ফল পাওয়া যাবে।
মাদ্রাসা বোর্ডের শিক্ষার্থীদের জন্য HSC<>MAD<>রোল<>সাল লিখে পাঠিয়ে হবে ১৬২২২ নম্বরে।
টেকনিক্যাল শিক্ষা বোর্ডের জন্য HSC<>TEC<>রোল<> সাল লিখে পাঠিয়ে দিতে ১৬২২২ নম্বরে। আর অনলাইনে ফল পাওয়া যাবে http://www.educationboardresults.gov.bd/ ওয়েবসাইটে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সর্বমোট ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৩০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসিতে অংশ নেয় ১১ লাখ ৩৮ হাজার ১৭ জন। যাদের মধ্যে পাঁচ লাখ ৬৩ হাজার ১১৩ জন ছাত্র এবং পাঁচ লাখ ৭৪ হাজার ৯০৪ জন ছাত্রী। মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় অংশ নেয় এক লাখ ১৩ হাজার ১৪৪ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬১ হাজার ৭৩৮ এবং ছাত্রী ৫১ হাজার ৪০৬ জন।
এ ছাড়া এইচএসসি (বিএম/ভোকেশনাল) পরীক্ষা দিয়েছে এক লাখ ৪৮ হাজার ৪৬৯ জন। এতে ছাত্র এক লাখ ৪ হাজার ৮২৭ জন এবং ছাত্রী ৪৩ হাজার ৬৪২ জন।