রাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ইমরুল কায়েস নামের এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে নিজ ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর সহপাঠীরা।
ইমরুল কায়েস গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলে থাকতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর গ্রামে। তাঁর বাবা ও মা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিন ভাই বোনের মধ্যে তিনি বড়।
ইমরুলের পরিবারের বরাত দিয়ে সহপাঠীরা জানান, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। তিনি পরিবার ও নিজের জীবন নিয়ে ‘সন্তুষ্ট’ ছিলেন না। তাঁর অস্বাভাবিক চলাচল ও আচরণের জন্য পরিবার থেকে এর আগে তাঁকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারেও রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে মায়ের কাছে মোটরসাইকেল কিনে দিতে বলেন। মোটরসাইকেল কিনেও দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। এরপর মায়ের কাছে ডিএসএলআর ক্যামেরা চান। ক্যামেরা কিনে না দেওয়ায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে রুমের দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দেয় ইমরুল। পরে রুমের দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শের-ই বাংলা হলের ইমরুলের সঙ্গে একই রুমে থাকতেন সুকান্ত রায়। তিনি জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে ইমরুল হতাশায় ছিল। হয়তো এই ডিপ্রেশন থেকেই সে আত্মহত্যা করেছে।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ বলেন, ‘ইমরুলের মৃত্যুতে বিভাগের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করেছি। তার পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাই।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দীর্ঘদিন ধরেই ইমরুল হতাশামূলক বিভিন্ন কথা বলে আসছিলেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর তিনি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘বিদায়, হাসিমাখা মুখ নিয়ে, আর বুকে কষ্ট নিয়ে? আমি কখনও হারি,নি হেরে গেছে ব্যর্থতা, ব্যর্থতা আত্মহত্যার মূল।’
একইদিন তিনি মাগুরায় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরাঘুরির কয়েকটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন ‘প্রথম ও শেষ ভ্রমণ’। এরপরে তাঁর ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে ক্যাপশন দেন ‘শেষ মুহূর্ত (লাস্ট মোমেন্ট)’।