শিক্ষক সমিতিতে ‘অটোপাস’ ঢাবির জন্য লজ্জার : ভিপি নুর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘এই করোনার সময়ে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন হয়েছে। সেখানেও অটোপাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য লজ্জার। যে বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় জাতির বিবেক, ছাত্র-শিক্ষককে বলা হয় সমাজ গড়ার কারিগর; সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গণতান্ত্রিক চর্চার জায়গাকে ধ্বংস করেছেন।’
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে ডাকসুর সাবেক ভিপি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলাসহ তিন দফা দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে হল খুলে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটির ঢাবি শাখার নেতাকর্মীরা।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের প্যানেল নীল দল। করোনাভাইরাস মহামারির কারণ দেখিয়ে বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল সাদা দলসহ অন্যরা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় নীল দলের সব প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়।
৩০ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে গত ৭ ডিসেম্বর শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে মহামারির মধ্যে তা স্থগিত রেখে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছিল বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। পরে ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা না দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দেন।
সমাবেশে নূর বলেন, সব ছাত্র সংগঠন একমত পোষণ করেছে, ঢাবিতে বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খুলতে হবে। হল খুলেই পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কাজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের এই দাবি এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল না খুলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসন করছে।
মেধাবী ছাত্রদের ছাত্ররাজনীতিতে আসার আহ্বান জানিয়ে নুরুল হক নুর বলেন, তরুণদের রাজনীতি সচেতন হতে হবে। ষাটের দশকে যে গণমুখী ছাত্ররাজনীতি ছিল সেই ধারাই যদি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাই তবে মেধাবী ছাত্রদের ছাত্ররাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের রাজনীতিতে সচেতন হতে হবে। ছাত্র রাজনীতির নামে অপরাজনীতি দিয়ে কোনো ধরনের পরিবর্তন হবে না।
ছাত্র সংসদ বন্ধ রাখায় সবার দায় রয়েছে উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক ভিপি আরো বলেন, বিভিন্ন সময় এই সংসদ বন্ধ করে রাখা হয়। কিন্তু আমি বলতে চাই, এই ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে শুধু বিএনপি কিংবা ছাত্রদল বন্ধ রেখেছে? ছাত্রলীগের ভাই, কিংবা আওয়ামী লীগের কোনো দায় নেই? সবার দায় রয়েছে। কেননা যেসময় যারা ক্ষমতায় ছিল তারা ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল। মেধাভিত্তিক ছাত্ররাজনীতিকে নিরুৎসাহিত করার জন্য অস্ত্র এবং পেশিশক্তি নির্ভর করে ছাত্ররাজনীতি কায়েম করেছিল।
ছাত্রদের দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক পরিবেশ, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা ও মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কথা বলতে হবে। সেজন্য মেধাভিত্তিক, সুস্থধারার রাজনীতি গড়ে তোলার জন্য অবশ্যই প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।