ড. শেখ মেহেদী হাসান পেলেন ইউজিসি পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপ

Looks like you've blocked notifications!
ড. শেখ মেহেদী হাসানের ছবি তার ফেসবুক আইডি থেকে নেওয়া

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. শেখ মেহেদী হাসানকে পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপের জন্য নির্বাচন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ইউজিসি। দেশে মানসম্মত গবেষণা পরিচালনার লক্ষ্যে এই ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আরও ৯ গবেষক এই ফেলোশিপ পেয়েছেন।

ইউজিসি জানিয়েছে, তাদের পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপ-২০২৩-এর জন্য দেশের বিভিন্ন পাবলিক, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় (শুধু স্থায়ী ক্যাম্পাস) এবং সরকারি কলেজের ৩০ জন গবেষক আবেদন করেছিলেন। নীতিমালা অনুযায়ী আবেদনকারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, প্রকাশনা, গবেষণার শিরোনাম, সারসংক্ষেপ, সুপারভাইজারের সুপারিশের ভিত্তিতে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে ১০ জন গবেষককে এই ফেলোশিপের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয়।

ড. শেখ মেহেদী হাসান ময়মনসিংহের  ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। ‘আইডেন্টিটি ফরমেশন অ্যান্ড বাংলাদেশ: ফোক ন্যারেটিভস’ বিষয়ক ফেলোশিপ পেয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, একটি জাতির লোককাহিনী এবং সংস্কৃতির ওপর গবেষণা এবং ডকুমেন্টেশন সব সময় প্রয়োজন ও প্রাসঙ্গিক। এমন একটি বিষয়ে গবেষণায় যুক্ত হতে পেরে ভালো লাগছে।’

ড. মেহেদী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ অধ্যয়ন ও বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার পরিপ্রেক্ষিতে জাতির পরিচয় গঠনের বহুমুখী স্তরগুলো বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণাটি শোষণ ও নিপীড়নের সম্ভাব্য প্যারামিটার বা হাতিয়ার চিহ্নিত করবে, যা বিভিন্ন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর প্রয়োগ করা হয়। যেহেতু বর্তমান অধ্যয়নটি বিশ্বকে জানাতে চায় যে বাংলাদেশি সমাজ কতটা বৈচিত্র্যময় এবং বহুত্ববাদী ও দেশের লোকসংস্কৃতি কতটা সমৃদ্ধ, তা অবশ্যই দেশের ভাবমূর্তিকে উন্নীত করবে। উপরন্তু, বর্তমান বৈশ্বিক একাডেমিয়ায় অলিখিত বা অপ্রকাশিত ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ থেকে মৌখিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের অধ্যয়ন বা ইতিহাস নেই, এমন নির্যাতিত ব্যক্তিদের ইতিহাস একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করেছে। এই ক্ষেত্রে, এই প্রকল্পটি অবশ্যই বাংলাদেশ অধ্যয়নের পাশাপাশি দক্ষিণ এশীয় গবেষণার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। গবেষণার ফলাফলগুলো বাঙালি মুসলমানদের পরিচয় সম্পর্কিত অনেক অজানা, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।’

ড. শেখ মেহেদী হাসান ছাড়াও যারা ফেলোশিপপ্রাপ্ত হয়েছেন, তারা হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নুরুল আমিন নূরী ও অধ্যাপক ড. ফিরোজা আক্তার খানম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শরাবান তহুরা ও অধ্যাপক ড. গুলশান আরা, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মো. তরিকুল ইসলাম, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. ফারহীন হাসান, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ড. শহীদ মো. আসিফ ইকবাল, ‍বরেন্দ্র ইউনিভার্সিটির ড. সুলতানা রাজিয়া এবং বৃন্দাবন সরকারি কলেজের ড. সুভাষ চন্দ্র দেব।

ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, দেশে মানসম্মত গবেষণা পরিচালনার লক্ষ্যে ইউজিসি পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপ প্রদান করছে। ইউজিসি এ সহায়তার পরিধি আরও বৃদ্ধি করবে বলে তিনি জানান। পাশাপাশি, ইউজিসি পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপপ্রাপ্তদের গবেষণার ফলাফল মূল্যায়ন করবে। এ ছাড়া গবেষণা ও গবেষণার কাজের ডেটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

এর আগে গত মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত ইউজিসি পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপ মনোনয়নবিষয়ক কমিটির এক সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ড. আলমগীর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, অধ্যাপক ড. হাসিনা খান, ইউজিসির রিসার্চ সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিকেশন ডিভিশনের পরিচালক ড. মো. ফখরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পরিচালক মো. শাহীন সিরাজ প্রমুখ।