দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে বাদ পড়াদের আপিল শুনানি চলছে। আজ সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ শুনানি চলবে।

গতকাল রোববার আপিলের শুনানি শুরু হয়েছিল। সেদিন শুনানি হয়েছে ৯৪ জনের। এর মধ্যে প্রার্থিতা ফেরত পেয়েছেন ৫৬ জন। প্রার্থিতা নামঞ্জুর হয়েছে ৩২ জনের এবং অপেক্ষায় রাখা হয়েছে ছয়জন আবেদনকারীকে।

নির্বাচনে অংশ নিতে সারা দেশের ৭৪৭ স্বতন্ত্রসহ মোট দুই হাজার ৭১৬ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তারা এক হাজার ৯৮৫টি মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৭৩১টি বাতিল ঘোষণা করেন। মনোনয়নপত্র বাতিলের হার ২৬ দশমিক ৯২ শতাংশ। আর বৈধ মনোনয়নপত্রের হার ৭৩ দশমিক শূন্য আট শতাংশ।

রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৫৬১টি আপিল পড়েছে নির্বাচন কমিশনে। এর মধ্যে ৩০টিরও বেশি আবেদন হয়েছে বৈধ ঘোষিত প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল চেয়ে। গতকাল শুরু হওয়া এ আপিল শুনানি পর্যায়ক্রমে ছয় দিন চলবে। কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তি চাইলে উচ্চ আদালতেও যেতে পারবেন।

প্রথম দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন যারা

আপিল শুনানির প্রথম দিনের প্রথমাংশে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ১২ স্বতন্ত্রপ্রার্থী। একই সময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে একজন, জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে তিনজন, তৃণমূল বিএনপির একজন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির দুজন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের একজন ও জাকের পার্টির একজন শুনানিতে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া স্বতন্ত্রপ্রার্থীদের মধ্যে আছেন—চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রার্থী আবদুস ছালাম, চট্টগ্রাম-২ আসনের মোহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম-১৫ আসনের আব্দুল মোতালেব, ঢাকা-৫ আসনের মো. কামরুল হাসান, টাঙ্গাইল-২ আসনের ইউনুছ ইসলাম তালুকদার, যশোর-২ আসনের এস এম হাবিবুর রহমান, জামালপুর-২ মো . জিয়াউল হক জিয়া, ফরিদপুর-১ আসনের মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, মেহেরপুর-২ আসনের মোখলেছুর রহমান, বরগুনা-১ আসনের মো. খলিলুর রহমান এবং রংপুর-২ আসনের বিশ্বনাথ সরকার।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনীত কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের মো. নাসিরুল ইসলাম খান তার প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। জাতীয় পার্টি থেকে বাদ পড়া তিনজনের পক্ষে রায় দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া এই তিন প্রার্থী হলেন–নোয়াখালী-২ আসনের তালেবুজ্জামান, খুলনা-৬ আসনের মো. শফিকুল ইসলাম মধু ও কুমিল্লা-২ আসনের এ টি এম মঞ্জুরুল ইসলাম।

এ ছাড়া তৃণমূল বিএনপির খুলনা-৪ আসনের শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি থেকে ঢাকা-২০ আসনের মো. মিনহাজ উদ্দিন ও মাদারীপুর-২ আসনের ইউসুফ আলী সুমনও তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

এ ছাড়া দিনের দ্বিতীয়াংশের শুনানিতে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ২১ জন। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী মুন্সীগঞ্জ-৩ আসন থেকে মমতাজ সুলতান আহমেদ ও যশোর-৩ আসনের জাকের পার্টির মো. মহিদুল ইসলামের মনোনয়ন বৈধ বলে রায় দিয়েছে নির্বাচন কমিশনার।

আপিল আবেদন বাতিল হয়েছে যাদের

টাঙ্গাইল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার আহসান হাবিব, জামালপুর-২ আসনের জাকের পার্টির মো. আব্দুল হালিম মণ্ডল এবং যশোর-৫ আসনের জাকের পার্টির প্রার্থী মো. হাবিবুর রহমানের আবেদন বাতিল হয়েছে ইসির শুনানিতে। এ ছাড়া মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী সোহানা তাহমিনা, চট্টগ্রাম-৪ আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী মোহাম্মদ ইমরান, ময়মনসিংহ-১০ আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী মোহাম্মদ আবুল হোসেনের আবেদনও বাতিল হয়।

প্রথমদিনের শুনানিতে অনুপস্থিত ছিলেন যশোর-১ আসনের জাপার প্রার্থী মো. আক্তারুজ্জামান, টাঙ্গাইল-১ স্বতন্ত্রপ্রার্থী সৈয়দ মাহমুদুল ইলাহ, গোপালগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কবির মিয়া, নেত্রকোনা-১ আসনের জাকের পার্টির প্রার্থী মো. ছমির উদ্দিন।