প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্বে দেশে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজমান : অর্থ প্রতিমন্ত্রী
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, কোভিড মহামারি ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব থাকার পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্ব ও সুপরিকল্পিত পরিচালনায় দেশের গড়প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজমান। তিনি বলেন, ‘মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তাকর্মসূচির আওতা ও বরাদ্দ ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি, বয়স্ক ভাতা এবং অন্যান্য ভাতা, ১৮ বছরের উপরে সকল নাগরিকের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু, এর সবই প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পরিকল্পনার ফসল।’
জাতীয় সংসদে গতকাল রোববার (৩ মার্চ) রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন প্রস্তাবটি সমর্থন করেন।
সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কে ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, ‘টেকসই উন্নয়নের অন্যতম শর্ত হলো উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সব নাগরিককে সম্পৃক্ত করা এবং সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। বঙ্গবন্ধুর বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংঘটিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনয়নের প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন- ২০২৩ প্রণীত হয় যার অধীনে প্রধানমন্ত্রী গত বছরের ১৭ আগস্ট সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ বাংলাদেশের ইতিহাসে যুগান্তকারী জনকল্যাণমুখী পদক্ষেপ যা সব নাগরিকের অবসরকালীন আর্থিক মুক্তির সনদ হিসেবে বিবেচিত হবে। ইতিমধ্যে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সংগতি রেখে সম্পূর্ণ আইটি প্ল্যাটফরমে সর্বজনীন পেনশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমটি উন্নয়ন করা হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একটি উন্নত রাষ্ট্রকে কেবল জিডিপির প্রবৃদ্ধি, জিডিপির আকার ও জনগণের মাথাপিছু আয় দ্বারা সবসময় সঙ্গায়িত করা যায় না। নাগরিকদের সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা উন্নত রাষ্ট্রের অন্যতম নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। উন্নয়নশীল দেশসমুহে নাগরিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে সর্বজনীন পেনশনের ধারণা জনপ্রিয় হয়ে আছে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সর্বজনীন পেনশন স্কীম নাগরিকদের বৃদ্ধ বয়সে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ একটি অধিকতর কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। যা হবে প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নের সমার্থক।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক। এই নির্বাচনে জয় হয়েছে দেশের জনগণের, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের, এই নির্বাচন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।’
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন, সরকারি দলের সদস্য সামছুল আলম দুদু, মেহের আফরোজ, আবুল কালাম আজাদ, ছোট মনির, খালেদা বাহার বিউটি, গোলাম দস্তগীর গাজী, নাজমা আক্তার, মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর, শবনম জাহান, সৌমেন্দ্র প্রাসাদ পান্ডে, আরমা দত্ত, জারা জাবীন মাহবুব, লায়লা পারভীন, কোহেলী কুদ্দুস, শামীমা হারুন ও রেজিয়া ইসলাম। জাতীয় পার্টির সদস্য বেগম সালমা ইসলাম, নুরুন নাহার বেগম। স্বতন্ত্র সদস্য এস এম আল মামুন, আমানুর রহমান খান রানা, মো. সাদ্দাম হোসেন (পাভেল), মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, এস এম ব্রহানী সুলতান মামুদ ও মো. আব্দুল মালেক সরকার।