সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল হাইয়ের বছরে আয় কোটি টাকা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল হাইয়ের বছরে আয় এক কোটি এক লাখ নব্বই হাজার টাকা। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দাখিল করা তার হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
হলফনামা অনুযায়ী, ২০২২-২৩ করবর্ষে নিজ নামে (নগদ) দুই কোটি ৭৬ লাখ ৭৪ হাজার ৭৪৯ টাকা ও স্ত্রীর নামে ১২ লাখ টাকা রয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দুই কোটি ছয় লাখ ৭৪ হাজার ৭৪৯ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে ১০ লাখ টাকা জমা দেখিয়েছেন আব্দুল হাই। সম্পদ হিসেবে দুটি জিপ গাড়ির মূল্য ধরা হয়েছে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা। পূর্বাচলে ৩০ লাখ ৫৪ হাজার টাকা মূল্যের সাড়ে সাত কাঠার প্লট, ঢাকার ডেমরাতে সাত শতক (মূল্য সাত লাখ) ও একই এলাকায় ১১ লাখ টাকা মূল্যের আরও আট শতক জমি রয়েছে তার। এ ছাড়া ঝিনাইদহ শহরে স্ত্রীর নামে ২৫ শতক জমি রয়েছে তার।
নিজের কাছে ২০ ভরি ও স্ত্রীর কাছে ৩০ ভরি স্বর্ণ আছে বলেও হলফনামায় উল্লেখ করেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। যেখানে ভরিপ্রতি চার হাজার টাকা করে দেখানো হয়েছে। তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী ভাতা পেয়েছেন ছয় লাখ ৬০ হাজার টাকা। এ ছাড়া কৃষিকাজ থেকে ৩০ হাজার ও ব্যবসা থেকে ৯৫ লাখ টাকা আয় দেখিয়েছেন আব্দুল হাই।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তৎকালীন হলফনামা অনুযায়ী আব্দুল হাইয়ের কাছে নগদ টাকা ছিল এক লাখ। ওই সময় নিজের কাছে স্বর্ণের পরিমাণ ছিল ২০ ভরি। মূল্য দেখিয়েছিলেন ৮০ হাজার টাকা। কৃষিখাত থেকে ২০ হাজার ও ব্যবসা থেকে এক লাখ ৫২ হাজার টাকা বার্ষিক আয় ছিল তার। স্ত্রীর নামে নগদ ছিল ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা ছিল এক লাখ ৮০ হাজার ৮১০ টাকা। এ ছাড়া ৮৫ হাজার মূল্যের ১৫টি ইলেট্রিক সামগ্রী ছিল। কৃষিজমি ছিল তিন একর। স্ত্রীর নামে অকৃষি জমি ছিল ২৪ দশমিক ৫০ শতক। মূল্য ধরা হয়েছিল ৫০ হাজার ৫০০ টাকা। স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এক লাখ ৮৪ হাজার ৪৬৬ টাকা জমা ছিল। ২০০৯ সালে একটি সেমি পাকা বাড়ি ছিল আব্দুল হাইয়ের। স্ত্রীর নামে ছিল একতলা একটি বাড়ি। নবম সংসদ নির্বাচনের সময় নিজের কোনো জিপ গাড়ি ছিল না তার।
হলফনামা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় থেকে তার নগদ টাকাসহ সম্পদ বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হয়। বার্ষিক আয় এক লাখ টাকা (নবম সংসদ নির্বাচনে) থেকে পরবর্তীতে ৫১ লাখ ৯৯ হাজার ২৮৪ টাকা (দশম জাতীয় সংসদ) হয়েছে আওয়ামী লীগের এই নেতার।
দশম সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে মৎস্য ও পশুসম্পদ প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন আব্দুল হাই। ওই সময় ঝিনাইদহ জেলা শহরের দুঃখী মাহমুদ সড়কে স্ত্রীর নামে একটি দোতলা বাড়ি ও পোস্টাল সেভিংস ছিল ২৪ লাখ ৯ হাজার টাকা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বার্ষিক আয় কমেছে। আয় ছিল ৩০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। কৃষি খাত থেকে ২৫ হাজার, ব্যবসা থেকে পাঁচ লাখ ও সংসদ সদস্য হিসেবে ভাতা পেয়েছেন ২৫ লাখ ১২ হাজার ১৬৪ টাকা। নিজ নামে নগদ অর্থ ছিল এক কোটি ১৯ লাখ ১৩ হাজার ৬৬১ টাকা ও স্ত্রীর নামে নগদ ১০ লাখ ৪৯ হাজার টাকা ছিল। স্ত্রীর নামে ১০ লাখ ২০ হাজার টাকার পোস্টাল সেভিংস ছিল বলে হলফনামায় দেখানো হয়। এ সময় (একাদশ সংসদ) ৪১ লাখ টাকার একটি জিপ ও চার লাখ ৫০ হাজার টাকার একটি কার, ৬০ হাজার টাকার আসবাবপত্র ছিল তার। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে ৪০ হাজার টাকার আসবাবপত্র ছিল।