‘এনসিপি ১৯ অক্টোবরের ভেতর সিদ্ধান্ত না নিলে আইনানুযায়ী চলবে ইসি’

নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চাওয়া শাপলার বিষয়ে ইসির অবস্থান একই। এনসিপিকে চিঠি দিয়েছি। ১৯ অক্টোবরের ভেতর ওনারা প্রতীক বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নিলে আইনানুযায়ী ইসি সিদ্ধান্ত নেবে। ইসি মনে করে, শাপলাকে প্রতীকে অন্তর্ভুক্ত করার দরকার নাই। গণভোটের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি।
আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে নির্বাচন ভবনে সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের ইসি সচিব আখতার আহমেদ একথা বলেন।
আখতার আহমেদ বলেন, স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের নিয়ে আমরা একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম পত্রিকায়। সেটার সম্পর্কে, বিভিন্ন দলগুলোকে নিয়ে আমাদের অনেক ধরনের তথ্য দিয়েছেন। এটা দিয়ে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে আমরা প্রকৃত দলগুলোকে চিহ্নিত করতে পারব। আমরা একটা অবজারভেশন পাব। সেজন্য আপনারা (সাংবাদিক) ধন্যবাদ পেতেই পারেন।
ইসি সচিব বলেন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়ে আমরা ১২টি দল সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্যানুসন্ধান করছি। মাঠ পর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তাদের নিয়োজিত করেছি। কিছু তথ্য সচিবালয় থেকে করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায় থেকেও তথ্য নিতে হচ্ছে। আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহে এ ব্যাপারে একটা সমাধানে আসতে পারব।
আখতার আহমেদ বলেন, আমরা অংশীজনদের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করেছি। এটা চলমান রয়েছে। আমরা আগামী ২০ অক্টোবর সশস্ত্র বাহিনী (সেনা-নৌ-বিমান) ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য যারা আছেন, তাদের সঙ্গে বসব। এ ব্যাপারে ইসি সচিবালয় তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করব।
ইসি সচিব বলেন, প্রবাসী ভোটের জন্য অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অ্যাপস লন্স করতে পারব। এখন পর্যন্ত আমরা ১১টি দেশে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছি। কিন্তু নির্বাচনের মধ্যে তাদের কতটুকু যুক্ত করতে পারব, সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ ব্যাপার। আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। তার ধারাবাহিকতায় আমাদের যে কেনাকাটার কাজ আছে, তা আমরা শেষ করব। কিছু সংগ্রহ হাতে এসেছে পৌঁছেছে।
কয়েকদিন আগে এনসিপি আড়াই ঘণ্টা আপনাদের সঙ্গে আলাপ করেছে। এর মধ্যে দুই ঘণ্টা প্রতীক প্রশ্নে আপনাদের কাছে শাপলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। আপনারা নাকি কোনো উত্তর দিতে পারেননি, চুপ ছিলেন। ব্যাপারটি কি তেমন? এ প্রশ্নে আখতার আহেমেদ বলেন, চুপ ছিলাম বললে তো আলোচনা থাকে না। আলোচনা মানে দুজনে কথা বলা। আলোচনায় কেউ একটু বেশি কথা বলবেন, কেউ কম বলবেন। কেউ শুনবেন। কেউ সমালোচনা করবেন। কেউ ক্লিয়ারিফিকেশন চাইবেন, এটাই তো হয়।
সচিব বলেন, ওনারা দু ঘণ্টা আড়াই ঘণ্টা মতো আমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এর পরবর্তীতে ওনারা বিভিন্ন জিনিস জানতে চেয়েছেন। আমরা আমাদের দিক থেকে ক্লারিফিকেশন আমাদের দিক থেকে বলেছি। এটাকে আপনি যদি বলেন ব্যাখ্যা তাহলে সেটা ব্যাখ্যা। আপনি যদি বলেন এটা তথ্য দেওয়া। সেটা তথ্য দেওয়া। আপনি যদি বলেন এটাকে একটা পর্যালোচনা। তাহলে পর্যালোচনা। এখন একেকজনের মানুষ একেকভাবে জিনিসটাকে ব্যাখ্যা করে।
আখতার আহমেদ বলেন, তাদের চাহিত প্রতীক হচ্ছে শাপলা। শাপলার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান একই। যেহেতু নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় এটা নাই, অর্থাৎ দেওয়ার সুযোগ নাই। আমরা একটা চিঠি দিয়েছি ওনাদেরকে। আগামী ১৯ অক্টোবরের ভিতরে ওনাদের বিকল্প চাহিত প্রতীক জানাবেন। যদি এটা ১৯ তারিখের ভিতরে না জানান, তাহলে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন মনে করে শাপলাকে প্রতীকে অন্তর্ভুক্ত করার দরকার নাই। এটা জাতীয় প্রতীক কিংবা না, এই ব্যাখ্যাটা আমার মনে হয় এর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়।
জামায়াত পিআর ও গণভোট করতে চাই। এ ব্যাপারে সচিব বলেন, এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। যখন সিদ্ধান্ত নেবে তখন জানানো হবে। গণভোটের ব্যাপারেও একই কথা। যতক্ষণ না পর্যন্ত ইসিকে বলা হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এ ব্যাপারে আমাদের কোন কিছু করার নেই। ইসি তো আসলে নির্বাচনটা ব্যবস্থাপনা করে সিদ্ধান্তটা তো প্রাসঙ্গিকভাবে অন্য জায়গা থেকেও আসে। গণভোট নিয়ে যখন আলোচনাই হয় না আলাদাভাবে, এটা তো প্রাসঙ্গিক না। সরকার সিদ্ধান্ত দেবে ইলেকশন কমিশন এক্সিকিউট করবে গণভোটের।