‘দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে সুপারমার্কেট’
বাংলাদেশের জনগণের জীবনযাত্রায় সুপারমার্কেট নতুন মাত্রা তৈরি করেছে। গ্রাহক সেবার মান বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সেবা দেওয়াই আমাদের দেশের সুপারমার্কেটগুলোর মূল উদ্দেশ্য। শুধু জনগণের কাছে সহজে সব পণ্য তুলে দেওয়া নয়, সুপারমার্কেটগুলো দেশের অর্থনীতিতেও বিশষ ভূমিকা রাখছে।
আজ শনিবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন সুপারমার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
সুপারমার্কেট মালিক সমিতির নেতারা বলেন, সঠিক ওজন, পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করে সঠিক পণ্য ক্রেতা সাধারণের হাতে তুলে দিচ্ছে দেশের সুপারমার্কেটগুলো। আর এর এজন্য সাধারণ মানুষের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যার ফলে বিভিন্ন নামে গড়ে উঠছে নতুন নতুন সব সুপারমার্কেট। নিরাপদ খাদ্যে এই শিল্পের অবদান অনুধাবনযোগ্য। একই সঙ্গে এই সুপারমার্কেটগুলো বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তারা বলেন, একই ছাদের নিচে সব ধরনের পণ্য সহজে পাওয়ায় দেশের মানুষের কাছে এখন সুপারমার্কেটের চাহিদা বাড়ছে। রাজধানী ঢাকা ছাড়িয়ে এখন সুপারমার্কেট ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা শহরে। সুপারমার্কেটগুলো মূলত গ্রাহকদের ব্যস্ততম জীবনকে অনেকটা সহজ করে তুলেছে। এছাড়াও সুপারশপগুলো ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করায় দিন দিন এটি মানুষের কাছে আরো বেশি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।
মতবিনিময় সভায় সুপারমার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিয়াজ রহিম বলেন, দেশের প্রতিটি সুপারশপে নিজস্ব ফরমালিনমাপক যন্ত্র রয়েছে। এছাড়াও আমরা পণ্যের গুনগত মান যাচাই করে তারপর সেটি ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সুপারশপে খাদ্যের মান অটুট রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পণ্যের মান অক্ষুণ্ন রাখে।
নিয়াজ রহিম বলেন, সুপারমার্কেট ব্যবসা দেশের জনগণের কাছে শুধু নিরাপদ ও গুণগত পণ্যই তুলে দিচ্ছে না। একই সঙ্গে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল করছে। কারণ এসব সুপারমার্কেটে বেশিরভাগ খাদ্যপণ্য সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। যার ফলে দেশের সম্পদ দেশের মানুষের কাছেই থাকছে।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরো বলেন, আমাদের দেশে খাদ্যের গুণগত মান এবং নিরাপদ রাখার জন্য বিভিন্ন আইন-কানুন থাকলেও বিভিন্ন কারণে এসব আইনের সুষম ও সুষ্ঠু প্রয়োগ হচ্ছে না। ফলে প্রচলিত বাজারে খাদ্যের গুণগতমান ধরে রাখা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। যখন তখন সুপারশপে ভ্রাম্যমাণ আদালতে পরিচালনার ফলে অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতা সাধারণের কাছে সুপারশপ সম্পর্কে বিরুপ ধারণা তৈরি হয়। অথচ দেখা যায় যেসব পণ্যের ওপর ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করে সেসব পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সুপারশপগুলো নয়। কিন্তু আদালত পরিচালনা ও জরিমানার কারণে সুপারশপের আর্থিক ক্ষতির সাথে সাথে সুনামও নষ্ট হয়। তাই আমরা আহ্বান জানাব, পণ্যে বা খাদ্যে ভেজাল পাওয়া গেলে বিক্রেতাকে শাস্তি না দিয়ে উৎপাদনকারীকে শাস্তি দেওয়া উচিত হবে। তাহলে আর পণ্যে ভেজাল হবে না।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে নিয়াজ রহিম বলেন, ভেজালবিরোধী অভিযানে যখন কোনো সুপারশপকে জরিমানা করা হয় আপনারা সেটির নেগেটিভ দিকটি তুলে ধরেন। কিন্তু এর পেছনে কারা এবং সুপারশপের ভালো দিক ও দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশ করেন না। তাই আমাদের অনুরোধ সুপারশপগুলোর পজেটিভ দিকগুলোও আপনারা তুলে ধরবেন।
এদিকে সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিষয়ে সুপারশপ মালিকরা যা বললেন সে বিষয়ে আমি বলব, সরকারের উচিত সুপারশপ শিল্পকে এগিয়ে নিতে সহায়কের ভূমিকা রাখতে। আর শপ মালিকদের উচিত হবে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা ও সমঝোতার মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করা।
আনোয়ার ফারুক আরো বলেন, আপনারা নিজেরাই আপনাদের ভালো দিকগুলো গণমাধ্যমের সহযোগিতায় সরকার ও ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরুন। আর সরকারের উচিত হবে বেশি বেশি করে সুপারশপ তদারকি করা, তাহলে এ শিল্প এগিয়ে যাবে।
এছাড়াও মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন সাংবাদিক ও সুপারশপগুলোর প্রতিনিধিরা তাদের পরামর্শ ও মতামত তুলে ধরেন।