ফেসবুকের নতুন গেম!
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/10/21/photo-1508570637.jpg)
অনলাইন গেম বা ফেসবুক গেম শিশু-কিশোরর চিত্ত বিনোদনের জন্য খেলে। কিন্তু এই বিনোদন যখন অভিভাবকদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখন তা ভয়ঙ্কর খারাপ ছাড়া কিছু নয়। কারণ বাবা-মা সন্তানের হাতে ফোন তুলে দেন অতঙ্ক, দুশ্চিন্তা অথবা ভয়ে থাকার জন্য নয়। বেশ কিছু দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অনলাইন র্পোটাল, পত্রিকায় ‘ব্লু হোয়েল’ নামে একটি গেম নিয়ে বেশ তোপাড় হয়ে গেছে। এখনো সবাই চুপচাপ আছেন এমনটা নয়।
এরই মধ্যে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নতুন একটি ফেসবুক গেম। যার নাম ‘৪৮ আওয়ার চ্যালেঞ্জ’। এটি একটি বিপজ্জনক গেম যা শিশু-কিশোরদের ৪৮ ঘন্টা বা দুই দিনের জন্য বাড়ি থেকে নিখোঁজ থাকতে উৎসাহিত করে। এটি অভিভাবকদের মনে উদ্বেগের সৃষ্টি করছে। অল্পবয়সীরা প্রায়ই দুজন মিলে বা কয়েকজনের গ্রুপ করে এই গেম খেলে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সাহস দেখায়।
এই গেমটিতে অভিভাবক ও প্রিয়জনদের নজর ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে থাকার চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়। লুকিয়ে থাকার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গেমারের খোঁজে যত বেশিবার মেনশন (উল্লেখ,মন্তব্য, খোঁজা) করা হবে, তত বেশি স্কোর জমা হবে গেমারের অ্যাকাউন্টে। আর এই স্কোরের জন্য পরিবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য উধাও হচ্ছে শিশুরা। এদিকে অভিভাবকরা নানা দুশ্চিন্তায় রাতদিন যাপন করেন। এই গেমটি ১৪ বছর বয়স বা তার বেশি বয়সের ছেলেমেয়েদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এ রকমই ‘গেম অব ৭২’ নামে আরেকটি গেম ২০১৫ সালে শিশুদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ওই গেমটিও শিশুদের দুই থেকে তিনদিন পর্যন্ত নিরুদ্দেশ থাকার চ্যালেঞ্জ দিত। ‘৪৮ আওয়ার চ্যালেঞ্জ’ ওই গেমটির অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে।
সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর গেমটি খেলে বাসা থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। পুলিশ ওই শিশুটিকে অন্য একটি এলাকায় খুঁজে বের করে। ওই সন্তানের মা সংবাদমাধ্যমকে জানান যে, ‘আমি দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আমার সন্তানের হয়তো খারাপ কিছু ঘটেছে। অথচ বাচ্চারা এই খেলাটিকে মজা হিসেবে দেখছে।’
এভাবে নিরুদ্দেশ হওয়ার ফলে শিশুরা নানাবিধ বিপদের সম্মুখীন হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। একা পেয়ে শিশুদের অপহরণ, ধর্ষণ বা হত্যার মতো জঘন্য কাজ করতে পারে দুষ্কৃতিকারীরা। তাই শিশুদের এসব গেম খেলা উচিত নয় বলে মনে করছেন তাঁরা।
বাচ্চারা অবুঝ। তারা চ্যালেঞ্জ নিবে, চিত্তের বিনোদনের খোঁজে থাকবে সবসময় এটাই স্বাভাবিক। বিনোদনের জন্য যত ধরনের ঝুঁকি নিতে পারে তা নিবে। কিন্তু যে কোনোভাবে বিনোদন তাদের চাই। তাই আপনার সন্তান কখন কি করছে, এই বয়সে তারা কী চায় এই দিকে লক্ষ রাখতে হবে অভিভাবকদেরই। যদি তাকে আপনি নজরের মধ্যে রাখতে পারেন, সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করে দিতে পারেন তাহলে সে এমনটা করবে না।
লেখক : শিক্ষার্থী ও দৈনিক আমাদের সময়ের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি