ডিএসইর পিই রেশিও সিঙ্গেল ডিজিটে অবস্থান
বিদায়ী সপ্তাহে (রোববার থেকে বৃহস্পতি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) সিঙ্গেল ডিজিট বা একক সংখ্যায় চলে এসেছে। এই পিই রেশিও হিসেবে ডিএসইতে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারের কোনো কোম্পানির পিই রেশিও যদি সিঙ্গেল ডিজিটে থাকে, তাহলে সেখানে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিরাপদ ধরে নেওয়া হয়। এছাড়া পিই রেশিও ডিজিট যদি ১৫ পয়েন্ট পর্ষন্ত অবস্থান করে, তবে সেখানেও বিনিয়োগ নিরাপদ বলে ধরা হয়ে থাকে। অন্যদিক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসাবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। সেই হিসেবে, ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। এসব বিবেচনায় গত বৃহস্পতিবারের ডিএসইর পিই রেশিও হিসেবে বিনিয়োগ নিরাপদ অবস্থানে আছে। তেমনি খাতভিত্তিক বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে অধিকাংশ নিরাপদে রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, সিঙ্গেল ডিজিট পিই রেশিও বিনিয়োগের জন্য অতি উত্তম। তবে পিই রেশিও ১৫ পয়েন্ট পর্ষন্ত বিনিয়োগের জন্য কিছুটা নিরাপদ। সেই হিসেবে, বর্তমানে ডিএসইর পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ১০ পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে। যা ডিএসইতে বিনিয়োগ নিরাপদ বলে গণ্য। একই প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ডিএসইর পিই রেশিও বর্তমানে ৯ দশমিক ৯৩ পয়েন্টের ঘরে। যা বিনিয়োগ জন্য ভাল।
ডিএসইর পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বৃহস্পতিবার ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করেছে ৯ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে। এর আগে গত ৯ মে (বৃহস্পতিবার) পিই রেশিও অবস্থান ছিল ১১ দশমিক ১৬ পয়েন্টে। আবার ডিএসইতে খাতভিত্তিক হিসেবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশি নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে ব্যাংক খাত। খাতটিতে গত বৃহস্পতিবার পিই রেশিও অবস্থান করে ছয় দশমিক ১৪ পয়েন্টে। যদিও গত ৯ মে ছিল ছয় দশমিক ৮৩ পয়েন্টে। অপরদিক গত বৃহস্পতিবার সিরামিক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৭৬ দশমিক ২৭ পয়েন্টে। যা গত ৯ মে অবস্থান ছিল ৮৫ দশমিক শূন্য দুই পয়েন্টে। পিই রেশিও হিসেবে সিরামিক খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকির শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে এ খাতটি।
বর্তমানে খাতভিত্তিক হিসেবে ব্যাংকের পর বিনিয়োগ নিরাপদ জায়গায় রয়েছে টেলিকম খাত। এই খাতের পিই রেশিও রয়েছে সাত দশমিক ২৯ পয়েন্টে। পরে অবস্থানে রয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত। যার পিই রেশিও আট দশমিক ২৮ পয়েন্টে। এরপরে সিমেন্ট খাতের পিই রেশিও ৯ দশমিক ৩৬ পয়েন্টে এবং ওষুধ রসায়ন খাতে ১৩ দশমিক ১১ পয়েন্টে।
খাতভিত্তিক পিই রেশিওগুলোর মধ্যে প্রকৌশল খাতে ১৩ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ১৩ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট, বিমা খাতে ১৪ দশমিক ৩৪ পয়েন্টে, পাট খাতে ১৪ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতে ১৪ দশমিক ৫০ পয়েন্টে, নন ব্যাংকিং আর্থিক খাতে ১৫ দশমিক ১৫ পয়েন্টে, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ১৬ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট, সেবা ও আবাসন খাতে ১৭ দশমিক ৩২ পয়েন্ট, পেপার ও প্রিন্টিং খাতে ১৯ দশমিক ৩৬ পয়েন্টে, আইটি খাতে ১৯ দশমিক ৫৯ পয়েন্টে, ট্যানারি খাতে ১৯ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ২৮ দশমিক শূন্য ছয় পয়েন্টে, বিবিধ খাতে ৩০ দশমিক ৫০ পয়েন্টে এবং সিরামিক খাতে ৭৬ দশমিক ২৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।