ডিএসইতে মূলধন ৪৭ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে
গত এক মাসে জেগে উঠেছে পুঁজিবাজার। অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাসে (৬ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স উত্থান হয়েছে পাঁচশ পয়েন্ট। আলোচিত সময়ে ডিএসইতে মূলধন বেড়েছে ৪৭ হাজার কোটি টাকা। চাঙ্গার ফলে লেনদেন গড়ে আটশ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।
বিনিয়োগে গুটিয়ে থাকা অনেকেই লেনদেনে ফিরছে জানিয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের গত এক মাস বাজারে লেনদেন বেড়েছে। সূচকসহ অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দরও বেড়েছে। এসময় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে ভালো ও মৌলভিত্তিক শেয়ার কেনাবেচায়।
তারা বলেন, বর্তমানে শেয়ার কারসাজিদের আনাগোনা কমেছে। এতে বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে বুঝে শুনে বিনিয়োগ করছেন। ফলে মৌলভিত্তি শেয়ার কেনাবেচায় বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠেছে তাঁরা। যার জন্য বাজার ইতিবাচক।
চাঙ্গা পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে সরকারি প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, মৌলভিত্তি কোম্পানির শেয়ারে আগ্রহী হয়ে উঠেছে বিনিয়োগকারীরা। যা বাজারের জন্য গুড সাইন।
দুর্বল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে অতীতে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন জানিয় আইসিবি চেয়ারম্যান বলেন, সেইসব ব্যক্তি শ্রেণীর বিনিয়োগকারী এখন ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ার সম্পর্কে সচেতন হয়েছেন। তাই এখন তাঁরা বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করছন।
ডিএসইর ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১০ অক্টোবর পুঁজিবাজারে সরকারি বন্ডের লেনদেন শুরু হয়। এরপর ডিএসইতে ২৫০ বন্ডের লেনদেন হয়। এতে ডিএসইর পুঁজিবাজারের মূলধন ২ লাখ ৫২ হাজার ২৬৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছিল। পরে গত ২৭ অক্টোবর বাজার মূলধন কমে দাঁড়িয়েছিল সাত লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। পুঁজিবাজার মন্দায় পরে সেখান থেকে মূলধন আরও কমে। গত ৪ আগস্ট পুঁজিবাজার মূলধন ছিল ছয় লাখ ৪৫ হাজার ৪৪৪ কোটি ৬১ লাখ টাকায়। আগের সপ্তাহের বৃহস্পতিবারে (৫ সেপ্টেম্বর) এই মূলধন দাঁড়ায় ছয় লাখ ৯২ হাজার ৪৩১ কোটি ১৮ লাখ টাকায়। এক মাসের ব্যবধানে ডিএসইতে মূলধন বেড়েছে ৪৭ হাজার ৯৮৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
গেল ৫ আগস্টের আগের এক মাসে ডিএসইতে গড় লেনদেন ছিল চারশ-পাঁচশ কোটি টাকা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের গত এক মাস সেই লেনদেন গড় সাতশ থেকে আটশ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। গেল মাসে সব ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়। গত এক মাসে ডিএসইএক্স ৪৯৮ দশমিক ৭২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ৭২৮ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে। এসময় ডিএসই৩০ সূচক ২৫৫ দশমিক ৩২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় দুই হাজার ১১৪ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে। এছাড়া শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৮৪ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ২২৮ দশমিক ৮০ পয়েন্টে।