শেয়ারপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে লেনদেনে সেরা গ্রামীণফোন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিকম খাতের কোম্পানি গ্রামীণফোনের ৯৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহে, যা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মোট লেনদেনের চার দশমিক ১১ শতাংশ। এই সপ্তাহতে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে। অপরদিক সপ্তাহটিতে শেয়ারপ্রতি দর বেড়েছে পাঁচ টাকা ১০ পয়সা। এতে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মাধ্যমে বাজারে মূলধন বেড়েছে ৬৮৮ কোটি ৬৫ লাখ ৩০ হাজার ১১২ টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) গ্রামীণফোনের শেয়ারের সমাপনী দর দাঁড়ায় ৩৪৫ টাকা ৭০ পয়সা। আগের সপ্তাহের ১৩ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৩৪০ টাকা ৬০ পয়সা। গত বৃহস্পতিবার মোট শেয়ারের মাধ্যমে বাজারে মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৬৭৯ কোটি ৮৭ লাখ ১৭ হাজার ৬০৫ টাকা। যা আগের সপ্তাহের ১৩ ফেব্রুয়ারি হয়েছিল ৪৫ হাজার ৯৯১ কোটি ২১ লাখ ৮৭ হাজার ৪৯৩ টাকা।
গেল সপ্তাহে ৪১৩টি কোম্পানির দুই হাজার ৩৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সেখানে সপ্তাহটিতে শুধু গ্রামীণফোনের ৯৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের চার দশমিক ১১ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) কোম্পানিটির অডিটেড সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৮৬ পয়েন্টে।
পুঁজিবাজারের কোনো কোম্পানির পিই রেশিও যদি সিঙ্গেল ডিজিটে থাকে, তাহলে সেখানে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিরাপদ ধরে নেওয়া হয়। এ ছাড়া পিই রেশিও ডিজিট যদি ১৫ পয়েন্ট পর্যন্ত অবস্থান করে, তবে সেখানেও বিনিয়োগ নিরাপদ বলে ধরা হয়ে থাকে। তবে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসাবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। সেই হিসেবে ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। মানে পিই রেশিও ৪০ এর ওপরে গেলে বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পিই রেশিও যত বাড়বে ঝুঁকির মাত্রা তত বাড়তে থাকবে।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণফোন গত সমাপ্ত হিসেব বছরের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর, ২০২৪) বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৭০ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩ এপ্রিল। বিনিয়োগকারী নির্বাচনের জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ হয়েছে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি।
কোম্পানিটির গত সমাপ্ত হিসেব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২৬ টাকা ৮৯ পয়সা। আগের সমাপ্ত হিসাব বছরের (২০২৩) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ২৪ টাকা ৪৯ পয়সা। গত সমাপ্ত হিসেব বছরের কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছে ৪৫ টাকা ৯১ পয়সা। আগের বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ ছিল ৪৪ টাকা ৮৮ পয়সা। গত ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৪৭ টাকা ৯৫ পয়সা।
২০০৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় গ্রামীণফোন। ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন চার হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন এক হাজার ৩৫০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। শেয়ার সংখ্যা ১৩৫ কোটি তিন লাখ ২২টি। রিজার্ভে রয়েছে চার হাজার ৫১০ কোটি এক লাখ টাকা। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৯০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ছয় দশমিক ৩৯ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে দশমিক ৯৮ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে দুই দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরে কোম্পানিটির স্বল্পমেয়াদী ঋণ রয়েছিল ৩১১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।