বড় পতনে সূচক, ৭৮ শতাংশ কোম্পানির দরপতন

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আজ রোববার (১২ অক্টোবর) লেনদেন হয়েছে ৫৪২ কোটি টাকা। এদিন ডিএসইতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের বড় পতন হয়েছে। সূচকটি আজ কমেছে ৮১ পয়েন্ট। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে এদিন। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজ বাজারে মূলধনের পরিমাণ কমেছে চার হাজার ২৫৮ কোটি টাকা।
অন্যান্য খাতের কোম্পানির তুলনায় ব্যাংক, বিমা, প্রকৌশল, ওষুধ-রসায়ন ও বস্ত্র প্রতিষ্ঠানের মূলধন ও শেয়ার সংখ্যা বেশি। এসব খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার যেদিন দর কমে, সেইদিন পুঁজিবাজার পতনে থাকে। সেই হিসেবে আজ ব্যাংক, বিমা, প্রকৌশল ও ওষুধ খাতগুলোর ৮০ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়েছে। এছাড়া সিমেন্ট, আইটি, পাট, পেপার প্রিন্টিংসহ টেলিকম খাতগুলোর সব কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে এদিন। তারই প্রভাবে আজ ডিএসইতে সব ধরনের সূচকের পতন দেখা দিয়েছে।
আজ ব্যাংক খাতের ৩৬টির মধ্যে ৩১টি বা ৮৬ দশমিক ১১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। বিমা খাতের ৫৮টির মধ্যে ৫০টি বা ৮৬ দশমিক ২১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২১টির মধ্যে ১৮টি বা ৮৫ দশমিক ৭১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। জ্বালানি শক্তি খাতের ২৩টির মধ্যে ১৯টি বা ৮২ দশমিক ৬১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। প্রকৌশল খাতের ৪২টির মধ্যে ৩৪টি বা ৮০ দশমিক ৯৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। ভ্রমণ ও অবসর খাতের পাঁচটির মধ্যে চারটি বা ৮০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। চামড়া খাতের পাঁচটির মধ্যে চারটি বা ৮০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। ওযুধ ও রসায়ন খাতের ৩৪টির মধ্যে ২৭টি বা ৭৯ দশমিক ৪১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। নন ব্যাংকিং আর্থিক খাতের ২৩টির মধ্যে ১৭টি বা ৭৩ দশমিক ৯১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। বস্ত্র খাতের ৫৮টির মধ্যে ৪১টি বা ৭০ দশমিক ৬৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। সিরামিক খাতের পাঁচটির মধ্যে তিনটি বা ৬০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে।
এছাড়া বিবিধ খাতের ৬০ শতাংশ, সিরামিক খাতের ৬০ শতাংশ, সেবা আবাসন খাতের ৫০ শতাংশ এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ৪৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর এদিন পতন হয়েছে।
ডিএসইতে শেয়ার বিক্রির সময় আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ২১ মিনিটে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স পতন হয় ২৯ পয়েন্ট। বেলা বাড়ার পর সেই পতন বৃত্ত আরও বাড়তে থাকে। লেনদেন শুরুর প্রথম দুই ঘণ্টা ২৬ মিনিটে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স পতন হয় ৫৯ পয়েন্ট। পরে পতন আরও বাড়ে। লেনদেন শেষে সূচক ডিএসইএক্সের পতন হয় ৮১ দশমিক ২৬ পয়েন্ট। সূচকটি কমে দিন শেষে দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ২০২ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসইএস সূচক ১৯ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় এক হাজার ১১৪ দশমিক ৭৯ পয়েন্টে। ডিএস-৩০ সূচক ৩৪ দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় এক হাজার ৯৯৮ দশমিক ৪৪ পয়েন্টে।
আজ লেনদেন হয়েছে ৫৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৫৩০ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইতে মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ১২ হাজার ৬৬৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। গত বৃহস্পতিবার মূলধন ছিল সাত লাখ ১৭ হাজার ১২৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এদিন লেনদেন হওয়া ৩৯৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ৪৭টির, কমেছে ৩১১টির বা ৭৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ। শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির। আজ লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে সিভিও পেট্রোলিয়ামের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ১৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা, সিমটেক্সর ১৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা, ডমিনেজ স্টিলের ১৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, রবির ১৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, সোনালী পেপারের ১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা এবং সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের ১২ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
আজ দর কমার শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের শেয়ার। কোম্পানিটির দর কমেছে ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এদিন দর বাড়ার শীর্ষে উঠে এসেছে সিমটেক্সর শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ।