পাঁচ ব্যাংকের লেনদেন স্থগিত : ডিএসইতে সূচকের পতন
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন কমে আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ৪১৯ কোটি টাকার চলে এসেছে। এদিন লেনদেনে অংশ নেওয়া ৬৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। ডিএসইর সব ধরনের সূচকের পতন হয়েছে এদিন। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৯ পয়েন্ট। আগের কর্মদিবস বুধবারের তুলনায় আজ বাজারে মূলধনের পরিমাণ বেড়েছে।
একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা শরিয়াভিত্তিক পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের (এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক) শেয়ার আজ লেনদেন স্থগিত করেছে ডিএসই। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পরামর্শে ডিএসই এই লেনদেন স্থগিত করেছে।
এর আগে গতকাল বুধবার নানা অনিয়মে বিপর্যস্ত শরিয়াভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক একীভূত করতে পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এ বিষয় জানিয়ে পাঁচ ব্যাংকের সচিবদের পৃথক পৃথক চিঠি পাঠানো হয়েছে। একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, শেয়ারহোল্ডারদের ইকুইটি এখন নেগেটিভ। তাই শেয়ার দর জিরো বিবেচনা করা হবে। এ জন্য কাউকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। খবরটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পুঁজিবাজারের সিকিউরিটিজগুলোতে। এতে আজ লেনদেন শুরুতেই পতন রুপে দেখা মিলে ডিএসইকে। এরই প্রভাবে আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ১৬ মিনিটে সূচক ডিএসইএক্স ২১ পয়েন্ট পতন হয়। বেলা বাড়ার পর পতন বৃত্ত আরও বড় হয়। লেনদেন শুরুর তিন ঘণ্টা তিন মিনিটে সূচক ডিএসইএক্স ৫৮ পয়েন্ট পতন হয়। অবশ্য লেনদেনের শেষদিক পতনের এই গতি কমে আসে। লেনদেন শেষে সূচক ডিএসইএক্সের পতন হয় ১৮ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট। সূচকটি কমে দিন শেষে দাঁড়ায় চার হাজার ৯৬৭ দশমিক ৯৪ পয়েন্টে। ডিএসইএস সূচক পাঁচ দশমিক ১৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৯ দশমিক ২১ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএস৩০ সূচক শূন্য দশমিক ১১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে এত হাজার ৯৪০ দশমিক ৬১ পয়েন্টে।
আজ লেনদেন হয়েছে ৪১৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কর্মদিবস বুধবার লেনদেন হয়েছিল ৪৮৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইতে মূলধন দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৯০ হাজার ৯১৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। যা গতকাল বুধবারের ছয় লাখ ৯০ হাজার তিন কোটি ৬৬ লাখ টাকা থেকে কম। এদিন লেনদেন হওয়া ৩৯০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ১০২টির, কমেছে ২৫১টির এবং শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টির।
আজ লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে মনোস্পুল বাংলাদেশের ১৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, এশিয়াটিক ল্যাবের ১৫ কোটি ১২ লাখ টাকা, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের ১৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, সিমটেক্সের ১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশনের ১২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং খান ব্রাদার্সের ১১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার।
এদিন দর কমার শীর্ষে উঠে এসেছে ফাস ফাইন্যান্সের শেয়ার, কোম্পানিটির দর কমেছে ১০ শতাংশ। অন্যদিক দর বাড়ার শীর্ষে উঠে এসেছে সিমটেক্সের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে আট দশমিক ৭৬ শতাংশ।

নিজস্ব প্রতিবেদক