ভারতে মাছ রপ্তানির ট্রাক তল্লাশির ঘটনায় বিজিবি-কাস্টমসে উত্তেজনা
ভারতে মাছ রপ্তানির ট্রাক তল্লাশি নিয়ে বিজিবি-কাস্টমস এখন মুখোমুখি অবস্থানে। বেনাপোল বন্দর এলাকায় মাছ রপ্তানির ট্রাক তল্লাশি নিয়ে বাকযুদ্ধে নামে এ দুটি সরকারি সংস্থা। গতকাল সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় প্রায় দুই ঘণ্টা রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। অবশেষে বন্দর এলাকায় লিংক রোডে বিজিবি মাছের কার্টনগুলো খুলে দীর্ঘ সময় পরীক্ষা করে কোনো অনিয়ম পায়নি।
রপ্তানির সময় কাস্টম কর্মকর্তারা মাছের ট্রাকগুলোতে থাকা ট্যাংরা, পারসি, তেলাপিয়া ও ভেটকি মাছ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভারতে রপ্তানির অনুমতি দেন। এতে বাঁধ সাধেন বিজিবির সদস্যরা।
মাছের কার্টনে ইলিশ মাছ আছে-এমন গোপন সংবাদে তারা রপ্তানিমুখী ট্রাকগুলো আটকে দেয়।
কাস্টমস সূত্র জানায়, গতকাল রাতে তিনটি ট্রাকে করে মাছের চালান ভারতে রপ্তানির সময় বন্দরের অভ্যন্তরে বিজিবি ট্রাকগুলো আটক করে। পরে কাস্টমসের অনুমতি না নিয়েই তারা ট্রাক তিনটিতে থাকা সবকটি মাছের কার্টন খুলে তন্ন তন্ন করে তল্লাশি করে কোনো অনিয়ম পায়নি। কিন্তু এতে প্রায় ১২ লাখ টাকার সাত মেট্রিক টন মাছ নষ্ট হয়ে যায় রপ্তানিকারকের।
এ ঘটনায় মাছ রপ্তানিকারক এরশাদুল আলম বলেন, ‘বিজিবির এ ধরনের হয়রানির কারণে মাছ রপ্তানিকারকরা বেনাপোল বন্দর দিয়ে আর ভারতে মাছ রপ্তানি করতে চাইছে না।’
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘৪৯ বিজিবির এলাকায় ২১ বিজিবির একটি দল এসে তিন ট্রাক সাদা মাছ রপ্তানির সময় তা জব্দ করে কিভাবে?
বিজিবি রপ্তানিকৃত মাছ বন্দর থেকে জব্দ করে নিয়ে যেতে চাইলে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও কাস্টমস কর্মকর্তারা বাধা দেন। যদি কোনো ইনফরমেশন থাকে তবে কাস্টমস ও বিজিবি যৌথভাবে তল্লাশি করার বিধান থাকলেও বিজিবি সদস্যরা তা আমলে নেয়নি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক নির্দেশনায় বলা হয়, উচ্চ পচনশীল মাছ দ্রুত খালাস করতে হবে।’
মাছের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সাউথ ফুড লিমিটেড, খুলনা ও নিলা এন্টারপ্রাইজ নামে সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যেকোনো পণ্য চালান পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেওয়ার পর অন্য কোনো এজেন্সির গোপন সংবাদ থাকলে তা কাস্টমসের সঙ্গে সমন্বয় করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার বিধান রয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান, ২১ বিজিবির সুবেদার মশিউর রহমানকে মাছের চালান কাস্টমসের সঙ্গে সমন্বয় করে দেখার কথা বললেও বিজিবি তা মানেনি। বন্ডেড এলাকার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো শুল্কপণ্য আটক করলে তা কাস্টমসের সঙ্গে সমন্বয় করে দেখার বিধিমালা রয়েছে। কিন্তু বিজিবি এসব মানে না।
২১ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুর এলাহী বলেন, ‘মাছের চালান জব্দ করে তল্লাশি করার সময় কাস্টমসের সঙ্গে বিজিবির কোনো মতবিরোধ হয়নি। আমাদের কাছে গোপন সংবাদ ছিল, রপ্তানিমুখী সাদা মাছের ভেতর ইলিশ মাছ যাচ্ছে। তাই মাছের ট্রাকগুলো তল্লাশি করা হয়েছে।’