শিগগিরই ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
সব ব্যাংকের ডলার লেনদেনে স্বচ্ছতা বাড়ানোর লক্ষ্যে মার্কিন ডলারের একক বিনিময় হার চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২৪ সালের পুরো সময়ে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। স্থানীয় মুদ্রা একাধিকবার অবমূল্যায়িত হওয়ায় আমদানির অর্থ পরিশোধের সুবিধার্থে ডলার সরবরাহ করেছিল ব্যাংকটি।
ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, বিশেষ করে ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে (এলসি)। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো প্রায়ই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত হারে মার্কিন ডলার সরবরাহ করতে হিমশিম খায়। যার ফলে আমদানিকারকরা তাদের দায় মেটাতে ডলারের জন্য বেশি দাম দিতে বাধ্য হয়। ডলারের এই উচ্চমূল্য সত্ত্বেও ২০২৪ সালে অভ্যন্তরীণ বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমেনি।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাত মাস আগে ক্রলিং পেগ সিস্টেম বাস্তবায়ন করে। এরপর এববার ডলারের জন্য একক বিনিময় হার চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা করেছে।
এই ব্যবস্থার অধীনে, কেন্দ্রীয় একটি রেফারেন্স রেট চালু করবে, যার ফলে ব্যাংকগুলো ক্রয় এবং বিক্রয় হারের মধ্যে সর্বোচ্চ ১ টাকার পার্থক্য নিয়ে ডলার লেনদেন করতে পারবে। ডলারের বাজার স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে শিগগিরই এ সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক পরিপত্র জারি করা হবে।
গভর্নরের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়া একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘যেসব ব্যাংক এই নির্দেশনা লঙ্ঘন করবে তার সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা এলসি লেনদেনের মূল্যের ৫ শতাংশ জরিমানার মুখোমুখি হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রায় ৪০টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ট্রেজারি প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন।
গভর্নর জোর দেন যে ব্যাংকগুলোকে অবশ্যই তাদের বিনিময় হার প্রকাশ করতে হবে এবং লেনদেনগুলো এই হার মেনে চলছে তা নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া লেনদেনের সব তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিতে হবে। স্বচ্ছতার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক দৈনিক দুইবার সার্বিক বাজার দর প্রকাশ করবে।
কমপ্লায়েন্স কার্যকর করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে একটি অভিযোগ সেল গঠন করবে। এই সেল ব্যাংকিং সেক্টর বা সংক্ষুব্ধ গ্রাহকদের অভিযোগ তদন্ত করবে।