ঢাবিতে চাকরিতে বয়সসীমা বৃদ্ধিসহ ৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন
চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫, অবসরে বয়সসীমা বৃদ্ধি, চাকরিতে আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধু চেয়ার ও একটি ম্যুরাল স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ’।
আজ শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এসময় তাদের চার দফা দাবিগুলো লিখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষিত চাকরি প্রার্থীরা বিগত প্রায় ১০ বছর যাবৎ সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছরে উন্নীতকরণের দাবি জানিয়ে আসছে। নির্বাচনি ইশতেহার ২০১৮ এর পাতা ৩২ এবং শিক্ষা দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে বলা আছে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে ২০১১ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়স ২ বছর বৃদ্ধি করে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়নি এবং চাকরি শেষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ স্বাভাবিক চাকরি প্রক্রিয়া ক্ষেত্রে অন্তরায়।’
বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস কমিশনে (বিসিএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর হলেও জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে (বিজেএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩২ বছর, সরকারি নার্সিং এ ৩৫ বছর এবং বেসরকারি স্কুল/কলেজে ৩৫ বছর। কিন্তু, দুঃখজনক হলেও সত্যি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংস্থাগুলো তাদের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা সরকারি মানদন্ড অনুযায়ী ৩০ বছরকেই অনুসরণ করে।’
বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের জাতীয় যুব নীতিতে ১৮-৩৫ বছর বয়সীদের যুবক বলা হলেও ৩০ বছর হলেই তাদের চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আজ থেকে ৩২ বছর আগে ১৯৯১ সালে ২৭ বছর থেকে ৩০ বছরে উন্নীতকরণ করা হয়। যখন বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল মাত্র ৫৭ বছর। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছর হলেও চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়নি।’
চাকরির আবেদন ফির বিষয়ে বক্তারা বলেন, ‘চাকরির আবেদন ফি সর্ব্বোচ ২০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে (১ম শ্রেণিতে ২০০ টাকা, ২য় শ্রেণিতে ১৫০ টাকা, ৩য় শ্রেণিতে ১০০ টাকা, ৪র্থ শ্রেণিতে ৫০ টাকা) প্রয়োজনে সরকারকে ভর্তুকির উদ্যোগ নিতে হবে। একই তারিখে একই সময়ে একাধিক নিয়োগ নেওয়া যাবে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার বসানোর বিষয়ে মানববন্ধনে বলা হয়, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, আইন অনুষদের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এর নামে বঙ্গবন্ধু ল কমপ্লেক্স, বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং একটি ম্যুরাল নির্মাণসহ দাবির বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে স্থান নির্ধারণের জন্য আইন বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অর্থাৎ “বঙ্গবন্ধু ল’ কমপ্লেক্স” এর কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পুনরায় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
মানববন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বিশিষ্ট নাট্যকার, অভিনেতা ও নির্মাতা সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক ফুটবলার ও কোচ রেহানা পারভীন, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক শরিফুল হাসান শুভ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব মো. রাসেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মো. সানোয়ারুল হক সনি এবং সদস্য সচিব এ আর খোকনসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।