পাবনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষক দেশে ফিরেছেন!
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) সদ্যবিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে পরিচিত সাবেক প্রক্টর ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রীতম কুমার দাস দেশে ফিরেছেন। অভিযোগ আছে, তিনি গোপনে দেশত্যাগ করেছিলেন। যদিও তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি অর্জিত ছুটি নিয়ে বিদেশে গিয়েছিলাম।’
এদিকে, দেশে ফিরেই সাবেক উপাচার্যের সময়কালীন প্রভাবশালী কয়েক শিক্ষককে নিয়ে ড. প্রীতম ক্যাম্পাসে মহড়া দিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র বলছে। এরপর তাঁদেরই কয়েকজনকে নিয়ে নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
এর আগে ড. প্রীতম কুমার দাসের গোপনে দেশত্যাগের খবরে পাবিপ্রবি ক্যাম্পাস এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সবখানে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় ওঠে। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন তাঁর ফেসবুকের টাইমলাইনে লেখেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা কতটা খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে, তার সর্বশেষ লিটমাস টেস্ট হলো অনিয়মের সাজা ভোগের আশঙ্কায় একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের গোপনে দেশ ত্যাগ। ... খুন করে, দুর্নীতি করে, টাকা পাচার করে গোপনে দেশ ছাড়ার কথা শুনেছি। কিন্তু, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছুটি না নিয়ে গোপনে দেশ ছাড়ার কথা এই প্রথম শুনলাম।’
সূত্র বলছে, সে সময় অনেকেই অধ্যাপক ড. প্রীতম কুমার দাসের দেশত্যাগে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এমনকি, পাবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য রোস্তম আলীর পক্ষের শিক্ষকরাও হতাশ হয়ে পড়েন।
সূত্র আরও বলছে, পাবিপ্রবি সাবেক উপাচার্য রোস্তম আলীর মেয়াদের প্রায় পুরো সময় প্রীতম কুমার দাস প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করেন। সেই উপাচার্যের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন নিয়োগ, উন্নয়নপ্রকল্প তদারকি, মাঠ সংস্কার, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদানসহ নানা কাজের অনিয়ম-দুর্নীতিতে। এক মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে এবং রোস্তম আলীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে ব্যাপক অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যহার করেন তিনি।
জানা যায়, বিলাসবহুল ফ্ল্যাটসহ নামে-বেনামে প্রীতম গড়ে তোলেন সম্পদ। তার বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ এনে তা তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন আমজাদ হোসেন।
এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে ড. প্রীতম কুমার দাস এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি অর্জিত ছুটি নিয়ে বিদেশে গিয়েছিলাম, গোপনে দেশত্যাগ করিনি।’
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেতন বন্ধ করলো কেন?—এমন প্রশ্নে প্রীতম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিজন ব্রহ্মের কাছে জানতে চাইলে তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গোপনে দেশ ত্যাগ করায় বিধিসম্মতভাবে সাবেক প্রক্টর প্রীতম কুমার দাসের বেতন-ভাতা বন্ধ করা হয়েছে। তিনি দেশে ফিরে পুনরায় আবেদন করেছেন। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও নিয়মের মধ্যেই বিষয়টি নিষ্পত্তি করবে কর্তৃপক্ষ।’