১৪ ছাত্রের চুল কেটে দিলেন শিক্ষক, প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতের বিরুদ্ধে।
এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার সকালে সব পরীক্ষা, ক্লাস বর্জনের পাশাপাশি প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
লাঞ্ছিত একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কয়েক দিন আগে ক্লাস চলাকালে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর বাতেন চুল বড় রাখার বিষয়ে ছাত্রদের বকাঝকা করেন। তাঁর ভয়ে সবাই পরের দিনই চুল ছোট করেন। গত রোববার দুপুরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা ছিল। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় দরজার সামনে ওই শিক্ষক কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা গেছে, তাদের মাথার সামনের বেশ খানিকটা চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দেন। এই অপমানে নাজমুল হাসান তুহিন নামে এক শিক্ষার্থী অতিমাত্রার ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
এ ঘটনার পর গতকাল সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন করে। পরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার জন্য বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস-১ এর গেটে জড়ো হয়। এ সময় ওই শিক্ষক তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করেন। তবে আজ সকালে আবার পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলন চলাকালীন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান রওশন আলম শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘আপনাদের দাবি-দাওয়া লিখিত আকারে জমা দেন। প্রক্টোরিয়াল বডি আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থী যেই অপরাধী হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রওশন আলম আরও বলেন, ‘করোনাকালীন নিজেদের নিরাপদ রাখতে আন্দোলন প্রত্যাহার করে ঘরে ফিরে যাক শিক্ষার্থীরা। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় একটি নতুন প্রতিষ্ঠান। এর মর্যাদা ও সম্মান রক্ষায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভূমিকা রাখতে হবে।’
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে কিছু ছাত্র আমার কাছে এসে পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বলেছিল। আমি এতে রাজি হইনি। হয়তো বা সেই রাগে এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে সহকারী প্রক্টর বাতের বলেন, ‘অন্য বিভাগের ছাত্ররা মিথ্যা গুজব ছড়াতে ফেসবুকে এসব দিয়েছে। আমার বিভাগের কোনো ছাত্র দেয়নি। এটা একটা গুজব।’
এ বিষয়ে জানতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আব্দুল লতিফকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।