শিক্ষার্থীকে মারধর করে হাসপাতালে পাঠাল ছাত্রলীগকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের চেয়ে জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীকে মারধর করে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ ওঠেছে এক ছাত্রলীগকর্মীর বিরুদ্ধে। গত সোমবার মীর মশাররফ হোসেন হলে এ ঘটনা ঘটলেও জানাজানি হয় মঙ্গলবার রাতে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মী লোকপ্রশাসন বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হক রাফি। ঘটনায় আহত হয়েছেন গণিত বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সেলিম আহমেদ। সেলিম জানিয়েছেন, বাঁশ-লাঠি দিয়ে মারধর করেই ক্ষান্ত থাকেননি ছাত্রলীগ কর্মী রাফি। রাস্তায় ফেলে বুকে লাথি দেন বলেও জানান সেলিম।
সেলিম আহমেদ বলেন, ‘গত সোমবার রাতে হলের সামনের দোকানে খাবার খেয়ে বের হওয়ার সময় দেখি লোকপ্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাফি আহমেদ ও তার বন্ধুরা দোকানের সামনের সরু রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। যাওয়ার জন্য জায়গা দিতে বললে রাফি আমার পরিচয় জানতে চায়। পরিচয় দিলে তার সিনিয়র জেনেও সে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে। এর প্রতিবাদ করলে একপর্যয়ে রাফি তার দুই বন্ধু- ফার্মেসি বিভাগের অনিক এবং ইতিহাস বিভাগের বাঁধনসহ আরো সাত-আটজনকে নিয়ে বাঁশ দিয়ে আমাকে মারতে শুরু করে। মারধরের ফলে একপর্যায়ে আমি রাস্তায় পড়ে গেলে আমার বুকে একাধিক লাথি দেয় রাফি।’
পরে হলের শিক্ষার্থীরা সেলিমকে রাফির মারধর থেকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সোমবার রাতেই তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। গতকাল মঙ্গলবার রাতে আবার হলে ফিরে এসেছেন সেলিম।
সেলিম জানান, মারধরের ফলে তাঁর বাম কাঁধে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে এবং ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা পাওয়ায় ঘাড় নাড়তে পারছেন না।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে হলের সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতারা বিষয়টি সমঝোতা করতে মিটিং করেছেন বলে ছাত্রলীগের একটি সূত্রে জানা গেছে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার রাতে রাফির মুঠোফোনে দুই দফা ফোন করা হলেও সাংবাদিক পরিচয় জেনে দুইবারই লাইন কেটে দেন। একপর্যায়ে ফোনটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন পাওয়া গেলে এসএমএস করা হলেও কোনো সাড়া দেননি রাফি।
পরে মীর মশাররফ হোসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশফিক সরকারকে ফোন করা হলে তিনিও ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাসেল বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি। এটা আসলে হলের সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির পরিপ্রেক্ষিতে ঘটেছে। তবে এখানে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয়। ছাত্রলীগের কেউ দোষ করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক উবাইদুর রহমান।