কুবিতে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ, সেই শিক্ষককে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে সহযোগী অধ্যাপক কাজী এম আনিছুল হককে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন।
আজ বুধবার (১২ মার্চ) কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উপাচার্য বলেন, ‘তদন্তের সময় ওই শিক্ষককে সবধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে ঘটনা সত্যি হলে তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হতে পারে।’
এর আগে অধ্যাপক আনিছুল ইসলামের বিরুদ্ধে উত্তরপত্রসহ প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. জাকির ছায়াদুল্লাহ বলেন, ‘বিকেলেই চিঠিটা পেয়েছি। ঘটনাটি আগে পুরোপুরি জানতে হবে। তারপর আগাব। আগামী সপ্তাহে একটি মিটিং কল করব। দ্রুত তদন্ত শেষ করার চেষ্টা করব।’
বুধবার গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ১৩ মার্চের অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দিনগত রাতে (১২ মার্চ) একটি বেনামি মেইল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপউপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে একটি মেইল পাঠানো হয়।
মেইলে উল্লেখ করা হয়, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৫ ব্যাচের সেমিস্টার পরীক্ষা চলছে। এই সেমিস্টারের প্রতিটি কোর্সের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী আনিছ এক নারী শিক্ষার্থীকে এগুলো দিয়েছেন। মেইলের সঙ্গে বিগত পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর সম্বলিত কিছু পিডিএফ সংযোজন করা হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি পিডিএফের মেটাডেটা উল্লেখ করা হয়।
এর আগে বিকেলে অভিযোগের বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম আনিছুল ইসলাম বলেন, ক্লাসে আমরা পড়াই, নোট দিই। ওইসব বিষয় থেকেই পরীক্ষায় প্রশ্ন হয়। এখন কোনো নোটের সঙ্গে প্রশ্ন তো মিলতেই পারে। এতে প্রশ্নফাঁসের কী হলো! তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্ত করে দেখুক।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, আমরা উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছি। তবে এই বিষয়টি যেহেতু বেনামি মেইল থেকে আসা, তাই আমরা সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না। শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও প্রভাষক জাকিয়া জাহান মুক্তা বলেন, প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব। অভিযোগটি ভিত্তিহীন নাকি সত্য, তা তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে জাকিয়া জাহান মুক্তা বলেন, প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর আমরা শিক্ষকরা মিলে এই ব্যাচের পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরী বলেন, প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত একটি মেইল পেয়েছি। আমরা ওই বিভাগের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি।