শান্তিপূর্ণ রাকসু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট প্রতিনিধি নির্বাচন স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ উপহার দিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন।
আজ বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রধান রাকসুর নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে সিইসি বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুল প্রতীক্ষিত রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর এই নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। রাকসু নির্বাচন আমাদের গৌরবময় ঐতিহ্যের প্রতীক, যা শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক চর্চা, নেতৃত্ব বিকাশ ও দায়িত্ববোধ গঠনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
সিইসি আরও বলেন, একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনই নির্বাচন কমিশনের মূল লক্ষ্য। এজন্য প্রতিটি ধাপে নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। একইসঙ্গে সংবাদ পরিবেশনে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের নিরপেক্ষতা ও ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং সেই ভূমিকা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
সিইসি জানান, নির্বাচন কমিশন, সিইসিসহ ছয় কমিশনার মিলে পুরো নির্বাচনি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সবাই দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। মোট ২৮ হাজার ৯০১ ভোটার ৮৬০ প্রার্থীর পক্ষে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়টি একাডেমিক ভবনে স্থাপিত ১৭টি ভোটকেন্দ্রে। কেন্দ্রীয় রাকসুর ২৩টি পদে ৩০৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, যার মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ অন্তর্ভুক্ত। সিনেটে পাঁচটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫৮ প্রার্থী। অন্যদিকে ১৭টি হল সংসদের ২৫৫ পদে মোট ৫৫৫ প্রার্থী লড়ছেন।
সিইসি আরও জানান, মোট ভোটারের মধ্যে ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ নারী এবং ৬০ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ। ভোট গ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১২ শিক্ষক, যার মধ্যে ১৭ প্রিসাইডিং অফিসার এবং বাকিরা সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া ৯১ কর্মকর্তা পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রফেসর ড. এফ. নজরুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দুই হাজার পুলিশ সদস্য, ছয় প্লাটুন বিজিবি এবং ১২ প্লাটুন র্যাব পুরো ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্র সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি ফলাফল গণনা ও ঘোষণা প্রক্রিয়া তদারকির জন্য একটি অভিজ্ঞ সদস্যদের সমন্বয়ে গণনা ও ফলাফল প্রস্তুত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সিইসি আরও বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি, সব প্রার্থী, সমর্থক ও ভোটার নির্বাচনের নিয়মাবলি মেনে চলবেন এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রাখবেন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা সবাইকে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।
গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে নির্বাচনি প্রচরণার সময়সীমা শেষ হয়েছে। আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দেখা যাচ্ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে।

আবু সাঈদ রনি, রাজশাহী (সদর-গোদাগাড়ী-পবা)