বৃহস্পতিবার থেকে জেলায় জেলায় ব্যালট বাক্স পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু ইসির
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে এগিয়ে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনের প্রস্তুতির লক্ষ্যে নির্বাচনি উপকরণ সংগ্রহের কার্যক্রম প্রায় শেষের পথে। বৃহস্পতিবার রাজধানীরা আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন থেকে জেলা পর্যায়ে এসব উপকরণ পাঠাবে ইসি। ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোতে ব্যালট বাক্স পাঠানোর মধ্যে দিয়ে এ প্রক্রিয়ার শুরু করতে যাচ্ছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার ঢাকার সব জেলার নির্বাচন অফিসে ব্যালট বাক্স পাঠিয়ে দেবেন। ঢাকার জেলা অফিসগুলোতে মোট ১২ হাজার ব্যালট বাক্স যাবে।’
এরপর পর্যায়ক্রমে দূরের জেলাগুলোতে নির্বাচনি মালামাল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এর পরের ধাপে খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুর ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে নির্বাচনি মালামাল পাঠাবে নির্বাচন কমিশন। তারপর অন্যান্য জেলাগুলোতে মালামাল পাঠানো হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সেখান থেকে কিছু মামলাল ভোটের দিন সকালে, কিছু মালামাল ভোটের আগেরদিন নির্ধারিত কেন্দ্রগুলোয় পাঠানো হবে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৩ ধরনের নির্বাচনী উপকরণ কিনতে হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যালট বাক্স, ব্যালট বাক্সের ঢাকনা ও লক, মুছে যায় না এমন কালি, বিভিন্ন ধরনের সিল, স্ট্যাম্পপ্যাড, বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, কাগজ, প্যাড, রশি, সুই-সুতা প্রভৃতি। এসব উপকরণের সিংহভাগ কেনা শেষ হয়েছে। যেগুলো কিনতে বাকি, সেগুলো জেলার নির্বাচন অফিসগুলো কিনে ফেলবে। যেমন, সুই-সুতা।
অশোক কুমার দেবনাথ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সব কেনাকাটা চলছে। অধিকাংশ কেনাকাটা শেষ। অনেক মালামাল পেয়েও গেছি। ব্যাগ, গালা, সিল, ব্যালট বাক্সসহ সবই পেয়েছি। নির্বাচন ভবনে আর জায়গা না থাকায় নতুন মালামাল আনা যাচ্ছে না। এখানে যেগুলো রয়েছে, আগে সেগুলো বিতরণ করতে হবে। এরপর বাকি কিছু অর্ডার করা মালামাল আনতে হবে। তফসিলের আগেই সব মালামাল আমরা পৌঁছে দেব। আর তফসিলের পরে আমরা বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয় (বিজি প্রেস) থেকে ব্যালট পেপার ছাপাব।’
আজ বুধবার বিকেলে নির্বাচন ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার ব্যালট বাক্সসহ অন্যান্য নির্বাচনি উপকরণ সাজানো রয়েছে। সব উপকরণ কিনে এখানে রাখা হয়েছে। কাল এখান থেকেই প্রথমে এসব উপকরণ ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচনি কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হবে। তারপর তিনি এগুলো ঢাকার সব জেলায় পাঠিয়ে দেবেন।
নির্বাচন কমিশনের ক্রয় ও মুদ্রণ শাখা সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত নতুন করে ৮০ হাজার ব্যালট বাক্স কেনা হয়েছে। এ ছাড়া আরও পুরানো ব্যালট বাক্স রয়েছে প্রত্যেক জেলা ও থানা নির্বাচন অফিসে।
ইতোমধ্যে কোন জেলায় কী পরিমাণ উপকরণের প্রয়োজন তা জানতে জেলা কর্মকর্তাদের ভোটকেন্দ্র ও কক্ষের সংখ্যা আগামী ১৯ অক্টোবরের মধ্যে জানাতে বলেছে ইসি। সংস্থাটির ক্রয় ও মুদ্রণ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাম্মদ এনাম উদ্দীন সোমবার (১৬ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সব জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন।
এবার ৪২ হাজার ৩৫০টির মতো ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা করেছিল জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কমিটি। সেখানে ভোটকক্ষ রাখা হয়েছিল দুই লাখ ৬১ হাজার ৫০০টির মতো। এর মধ্যে শুনানি শেষে টিকেছে ৪২ হাজার ১০৩টি কেন্দ্র। এতে ভোটকক্ষ রয়েছে দুই লাখ ৬০ হাজারের মতো।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন। সে সময় সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার ৬৫৭টি। এর মধ্যে যাচাই বাছাই শেষে ৪০ হাজার ১৮৩টি কেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়। এতে ভোটকক্ষ ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি।