রাবিতে পাঠাগারে জায়গা দখল নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবাসিক হলের বঙ্গবন্ধু পাঠাগারে জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির অভিযোগ উঠেছে। আজ সোমবার (৪ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাস্থলে উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীদের অবস্থান ও বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হতে দেখা যায়। তবে এ বিষয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন তারা।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন লতিফ হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি তাসকীফ আল তৌহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাসুদুর রহমান ও ছাত্রলীগকর্মী শাওন। তৌহিদ ও শাওন দুজনেই রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী। অন্যদিকে মাসুদ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিবের অনুসারী।
হল সূত্রে জানা যায়, হলের বঙ্গবন্ধু পাঠাগারটির ফ্লোর পরিষ্কার করে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করে হল প্রশাসন। এরপর পাঠাগারে তালা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ নেয় তাসকীফ আল তৌহিদের অনুসারীরা। কারণ হিসেবে তারা বলেন পাঠাগারে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের রাখা ও তাদের জিনিসপত্রের নিরাপত্তার জন্য তালা দেওয়া হয়।
তবে পাঠাগারে তৌহিদ তার একান্ত কাছের ছেলেদের পাঠাগারে রাখার জন্য অন্য কাউকে উঠতে না দিতেই তালাবদ্ধ করে রাখে, এমন অভিযোগে তালা খোলার চেষ্টা করে মাসুদ। এ সময় তালা খুলতে গেলে শাওনের সাথে তার হাতাহাতি হয়। একপর্যায় এতে যুক্ত হয় দুই গ্রুপের ছাত্রলীগকর্মীরা। এসময় ঘটনাস্থলে তাসকীফ আল তৌহিদ উপস্থিত হয়ে তিনিও উচ্চবাচ্যে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মী শাওন বলেন, ‘পাঠাগার যেহেতু এখনো চালু হয়নি, সেজন্য পরিক্ষার্থী রাখার জন্য ভাইয়ের (তৌহিদ) পক্ষ থেকে আমরা পাঠাগার পরিষ্কার করে তালা দিয়েছিলাম। সকালে মাসুদ এসে তালা ভেঙে পাঠাগার দখল করে নিয়েছে। পরীক্ষার্থী যারা ছিল তারা সবাই চলে এসেছে পাঠাগার থেকে।’
অভিযোগের বিষয়ে নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু পাঠাগার তালা বন্ধ করে রেখেছিল। আমি ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের রাখার ব্যবস্থা করার জন্যই সেখানকার তালা খুলতে বলি। এসময় শাওন ও মাহবুব নামের একজন আমার সাথে ক্ষিপ্ত আচরণ করে৷
তবে দুই পক্ষের মাঝে গালিগালাজের বিষয়টি অস্বীকার করেন হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তাসকীফ আল তৌহিদ বলেন, গালিগালাজের বিষয়ে কিছু জানি না। ঘুম থেকে উঠে দেখি জুনিয়রদের মধ্যে পাঠাগারে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। পরে তাদেরকে বুঝিয়ে বিষয়টা আমরা সমাধান করেছি। তবে হাতাহাতি হয়েছে কিনা বলতে পারছি না।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, তাদের মধ্যে সামান্য একটা বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়েছিল। আমি তাৎক্ষণিক বিষয়টা মীমাংসা করে দিয়েছি।
সার্বিক বিষয়ে নবাব আব্দুল লতিফ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, হল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের রাখার সার্বিক দায়িত্ব আমার হল প্রশাসনকে পালন করতে বলেছি। ছাত্রলীগের কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। আজ যা ঘটেছে তা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।