‘পুঁজিবাজারকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে ওয়ালটন’

পুঁজিবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা এমনই তলানিতে নেমেছে, যা এ মুহূর্তে কেবল ওয়ালটনই ফিরিয়ে আনতে পারে। বিনিয়োগকারীরা প্রত্যাশা করছেন, ওয়ালটন পুঁজিবাজারের জন্য আশার আলো হয়ে দেখা দেবে।
আগামী চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে ওয়ালটন পুঁজিবাজারকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের চিফ বিজনেস অপারেশন (সিবিও) কাজী আহসান হাবিব। সম্প্রতি পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা আনতে ভালো কোম্পানির ভূমিকা নিয়ে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাজী আহসান হাবিব বলেন, এক সময় গ্রামীণফোনকে নিয়ে অনেকেই বাজে মন্তব্য করেছিলেন। তবে তালিকাভুক্তির পর গ্রামীণফোন পুঁজিবাজারকে ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার আলো ছড়িয়েছে। তেমনিভাবে ওয়ালটন এখনোো দেশীয় কোম্পানি হিসেবে রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে ওয়ালটন যদি আন্তর্জাতিক কোম্পানিতে রূপান্তর হতে পারে, তাহলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতে আরো সক্ষম হবে।
কাজী আহসান হাবিব বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটে ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পুঁজিবাজারকে দাঁড় করেছিল কিছু ব্যাংক। তারপর ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পুঁজিবাজারে কাণ্ডারির ভূমিকা পালন করেছিল গ্রামীণফোন। আর ২০২০ সাল পরবর্তী চার থেকে পাঁচ বছর ওয়ালটন পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। ওয়ালটনের তেমন কোনো ঋণ নেই। সে হিসেবে একটি ভালো স্টকের ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল করছে তারা।
কাজী আহসান হাবিব আরো বলেন, ওয়ালটন যে সময়ে পুঁজিবাজারে আসছে, যে সময় লো ইন্টারেস্ট রেট বিরাজ করছে। এ সময়ই দেশে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন হবে। আর সেখানে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে ওয়ালটন। আর ওয়ালটনের দেখাদেখি আরো অনেক উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য এগিয়ে আসবে বলে আশা করছি। ওয়ালটনের সাবস্ক্রিপশন আগামী মাসে শুরু হচ্ছে। কোম্পানিটির সাবস্ক্রিপশন খারাপ হওয়ার সুযোগ নেই বলে মনে করছি।
প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের এই সিবিও বলেন, যুগের পরম্পরায় ওয়ালটন আধুনিক প্রযুক্তিগতভাবে রূপান্তরিত হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখলে সেদিন বেশি দূরে নয়, যখন সারা বিশ্ব বুঝবে ওয়ালটন মানে বাংলাদেশ। গত ১৫ বছর ধরে এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে ওয়ালটন। এ কারণে ওয়ালটন সারা বিশ্বের এত কোম্পানিগুলোর মধ্যে হারিয়ে যায়নি। এক সময় ওয়ালটন ওয়ার্ল্ডের লিডিং কোম্পানিগুলোর মতোই স্থান দখল করে নেবে।
পুঁজিবাজারের এ বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রত্যেক দেশেই একটি সিম্বল বা কাণ্ডারি প্রোডাক্ট থাকে। আমার মতে, বাংলাদেশের সিম্বল প্রোডাক্ট ওয়ালটন। পৃথিবীর যেকোনো দেশে স্যামস্যাংকে বলা হয়ে থাকে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি, ডেকোকে বলা হয় তুরস্কের কোম্পানি। ঠিক একইভাবে ওয়ালটনের প্রোডাক্ট দেখলেই বলা হয় এটা বাংলাদেশি কোম্পানি। ওয়ালটন হাঁটিহাঁটি পা, পা করে বড় হয়েছে। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের অদম্য মোটিভেশন না থাকলে কোম্পানিকে এ পর্যন্ত আনা সম্ভব হতো না। ওয়ালটন মনে-প্রণে দেশের কথা ভাবে বলেই এ পর্যায়ে আসতে পেরেছে।
গ্রাহকদের আস্থা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে কাজী আহসান হাবিব বলেন, আগামীতে গ্রাহকদের আস্থা বৃদ্ধিতে ওয়ালটনকে অত্যাধুনিক ই-প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা উচিত। কারণ সামনের দিনগুলো ই-প্ল্যাটফর্মের যুগ। তাই ই-প্ল্যাটফর্ম শক্তিশালী হলে ওয়ালটনের ব্যাপ্তি আরো বাড়বে।