আন্তর্জাতিক
গরুর চক্রে ভূত ভারতের বর্তমান রাজনীতি
‘দশ চক্রে ভগবান ভূত’ বলে একটা পুরোনো প্রবাদ আছে। অর্থাৎ দশজনে মিলে ন্যায়কে অন্যায় বলে পর্যবসিত করা। সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ভারত এ সময়ে বিজেপি শাসক নরেন্দ্র মোদির মৌলবাদের চক্রে পড়ে যেভাবে অন্ধকারে নিপতিত হচ্ছে, তাতে ভগবানের কতটা লাভ-ক্ষতি হবে, তা নিরূপণ করা না গেলেও প্রকৃত মনুষ্য সন্তানের যে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা শুরু হয়ে গেছে ইদানীং রোজকার মিডিয়ায় প্রকাশিত বহু বর্ণিল খবরই সে সাক্ষ্য দিচ্ছে।
বিজেপির অঙ্গসংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ, বজরং দল বা শিবসেনাদের গরুকেন্দ্রিক রাজনীতি ভারতীয় অসাম্প্রদায়িক মানবিক মূল্যবোধ বা পরস্পরের প্রতি সহিষ্ণু চেতনাকে যেভাবে গ্রাস করে চলেছে, তাতে মানুষের বাস উপযোগী আর থাকছে না ভারত। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে প্রজ্ঞা, জ্ঞান, সৌন্দর্য, সাহস, সততা, ত্যাগ, ন্যায়নিষ্ঠা, কর্মকুশলতা বা মানুষের জন্য কিছু করার সদিচ্ছা নয়, একমাত্র গরুই এখন ভারতের রাজনীতির প্রকৃত নিয়ামক।
তুমি যে জাতি-ধর্ম-বর্ণ বা গোত্রেরই হও না কেন, গরু বাঁচলে তুমি বেঁচেবর্তে থাকবে; আর গরু মেরেছ তো তুমিই নির্ঘাত মারা পড়বে! অ্যারিস্টটল, ম্যাকিয়াভেলি, বার্ট্রান্ড রাসেল বা জর্জ বার্নার্ড শ প্রমুখ পণ্ডিতের কথায় এখন আর ভারতবর্ষের রাজনীতির সংজ্ঞা নিরুপিত হবে না। ভারতের রাজনীতিরপ্রথম ও শেষ কথা এখন গরুমারা বিদ্যা।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের দাদরি এলাকায় গরুর মাংস খাওয়া ও ফ্রিজে রাখার গুজবে মোহাম্মদ আখলাক নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করে হিন্দু সম্প্রদায়ের উগ্রবাদী লোকজন। এ ঘটনার জেরে ভারতব্যাপী এর পক্ষে-বিপক্ষে এক ধরনের
উত্তাপ-উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রগতিশীল ও ব্যক্তির ইচ্ছার স্বাধীনতায় বিশ্বাসীরা আখলাকের জন্য হা-হুতাশ করছেন আর উগ্রবাদী সনাতনপন্থীরা আরো আখলাককে বিনাশ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে চলেছেন। সারা পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ যেখানে দৈনন্দিন আমিষের চাহিদা মেটাতে গরুতে তাঁদের রসনা তৃপ্ত করেন, সেখানে কেবল ধর্মের দোহাই দিয়ে ভারতবর্ষে গরু খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে চলেছে বিজেপির কট্টরপন্থি অনুগামীরা।
গরুর বুদ্ধিধারী সংঘ পরিবারের কাছে এখন মানুষের মূল্য তুচ্ছ; গরুর মূল্য ঈশ্বরের চেয়েও বড়। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে যে নরেন্দ্র মোদিকে ফেসবুক বা টুইটারে দিন-রাত কসরত করতে দেখা যায়, সেই প্রধানমন্ত্রীর
ছত্রছায়াতেই কি না এমন জরাগ্রস্ত গরুকেন্দ্রিক দুঃশাসন চলছে ভারতব্যাপী। তবে কি একজন বৈশ্বিক মানুষ হিসেবে এখন থেকে আমরা ভারতবর্ষকে এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপই ভাবতে থাকব? যে ধর্ম পৃথিবীতে মানুষই এনেছে, সেই
ধর্ম কি মানুষ মারার নিয়ামক হতে পারে?
হিন্দুধর্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধর্মগুরু স্বামী বিবেকানন্দের জীবদ্দশায় একবার হাতে একখানা গরুর ছবি নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এলেন ‘গোরক্ষিণী সভা’র এক সদস্য। জানালেন, দেশের সব ‘গো-মাতা’কে কসাইয়ের হাত থেকে রক্ষা
করা এবং রুগ্ন ও অকর্মণ্য গরুর সেবা করাই তাঁদের ব্রত। বিবেকানন্দ এসব শুনে বললেন, সে ঠিক আছে, কিন্তু মধ্য ভারতে দুর্ভিক্ষে নয় লাখ মানুষ মারা গেছেন, তাঁদের সাহায্যে আপনারা কিছু করছেন না? লোকটি বললেন, না, তাঁরা শুধু গরুদের জন্যই কাজ করে থাকেন। তা ছাড়া দুর্ভিক্ষ হয়েছে লোকের কর্মফলে, তাঁরা কী করবেন? বিবেকানন্দ বললেন, তবে তো এও বলা যায় যেগো-মাতারাও নিজ কর্মফলেই কসাইয়ের হাতে মরছেন! লোকটি থতমত খেয়ে বললেন, তাবটে, তবে কী, শাস্ত্রে বলে, গরু আমাদের মাতা। এবার সহাস্যে বিবেকানন্দেরজবাব : তা বটে, নইলে এমন সব কৃতী সন্তান আর কে প্রসব করবেন?
আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ধর্মের নামে এমন ভণ্ডামি দেখেই হয়তো তাঁর কালে ‘মানুষ’ কবিতায় লিখেছিলেন, ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি’ মরি’ ও’ মুখ হইতে কেতাব গ্রন্থ নাও জোর ক’রে কেড়ে, যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে,পূজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল! মূর্খরা সব শোনো, মানুষ এনেছে গ্রন্থ; গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো। নজরুলের এই মর্মবাণী সংঘবাজ ধর্মান্ধদের কানে পৌঁছাবে না জানি। যে দেশেকট্টরপন্থী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বন্ধুরাই গো-মাংস রপ্তানিতে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা কামান, সে দেশেই কি না হরিয়ানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাত্তার ঘোষণা দেন, মুসলমানরা ভারতে বসবাস চালিয়ে যেতে পারে, তবে তাঁদের গরুর মাংস খাওয়া ছাড়তে হবে! গরু বাণিজ্যে নিজেদের প্রকৃত আচারের সঙ্গে মুখের বুলির অমিল সঞ্জাত এমন ভণ্ডামিকে পরিহাস ছাড়া আর কী-ই বা বলা যায়! ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতা ও হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সাবেক এই নেতা মনোহর দাবি করেন, ভারতে গরু হলো বিশ্বাসের বস্তু। ভারতে খ্রিস্টান ও মুসলমানের সংখ্যা ২৫ কোটি।
গো-মাতা নিয়ে মাথা ঘামানোর যাদের সময় নেই, জীবনযুদ্ধে পর্যুদস্ত কিংবা পুলিশের কাছে বিচার চাইতে গিয়ে বিবস্ত্র হওয়া সেই নিম্নবর্ণের হরিজনের সংখ্যা ৩৫ কোটি। তাহলে ১২০ কোটি জনসংখ্যার ভারতের অর্ধেকই যেখানে গরু রাজনীতির অনুগামী নয়, সেখানে এসব মানুষের অনুভূতি বা বিশ্বাসের স্বরূপ বামূল্যমানটা তবে কী হবে? সম্প্রতি গরু নিয়ে তুলকালামের কারিগরদের কাছে এ প্রশ্নের জবাব কস্মিনকালেও হয়তো মিলবে না। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর দেশজুড়ে গো-হত্যা বন্ধ করা নিয়ে এক প্রকারের ছেলেমানুষি কাণ্ডকারখানা ঘটে চলেছে। গরু জবাই, গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ বা খাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশের সঙ্গে বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকাশ্য গরু ব্যবসায়ও ইতি টানা হয়েছে। কিন্তু অপ্রকাশ্য দেদার বাণিজ্যে কোনো বাধা চোখে পড়ছে না। অন্যদিকে গরু যদি ঈশ্বর সমগোত্রীয় বিশ্বাসের বস্তুই হয়, তবে পৃথিবীব্যাপী দৈনন্দিন গো-হত্যা বন্ধ করার উপায় কি সংঘ পরিবারের আদৌ জানা আছে? তাহলে ধর্মের নামে গরুর অধিকার কীভাবে প্রতিষ্ঠা করবেন উনারা? আসলে এসবই অবাস্তব ও অসম্ভব।
তাই তো গরু খাওয়ার অপরাধে আখলাককে পিটিয়ে হত্যার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লেখক অরুন্ধতী রায় টুইট করেন, আমি এই মাত্র গরুর মাংস খেলাম, আসো আমাকেও হত্যা কর!সে সঙ্গে দেশটির বিভিন্ন শিক্ষায়তনেও বিফ পার্টি করে গরু রাজনীতি নিয়ে উগ্রতার প্রতিবাদ জানিয়েছেন মানবিক বোধসম্পন্ন ছাত্র-শিক্ষকরা। এ ছাড়া গত কয়েক দিনে ভারতের বর্তমান হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি সরকারের নীতির সমালোচনা করে এবং দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ওপর লাগাতার আঘাতের প্রতিবাদে একের পর এক কবি-সাহিত্যিকরা পদক ফিরিয়ে দিয়েছেন। নয়নতারা সাহগাল, অশোক বাজপেয়ি ও রেহমান আব্বাস, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও কবি সারা জোসেফ পদক ফিরিয়ে দিয়ে গরু নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের এমন উল্লম্ফন ওক্রমবর্ধমান ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
অথচ ভারতীয় খ্যাতিমান ইতিহাসবিদ ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দ্বিজেন্দ্র নারায়ণ ঝা বলেছেন, প্রাচীন ভারতে বহু শতক ধরে গরুর মাংস খাওয়ার রেওয়াজ চালু ছিল, তার বলিষ্ঠ প্রমাণ প্রাচীন ভারতীয় লেখায় রয়েছে। ‘গরু-বলয়’ নামে পরিচিত এসব অঞ্চল থেকে ক্রমে এ রেওয়াজ উঠে যায়। তবে দেশের অনেক অংশে, যেমন—কেরালা ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে এখনো এই অভ্যাস (গরু খাওয়া) চালু আছে। কেরালায় ৭২টি সম্প্রদায় গরু খায় এবং এদের অনেকেই হিন্দু। সুতরাং আমি বলব না যে, গরুর মাংস খাওয়া হিন্দু-আদর্শের সঙ্গে বেমানান। তবে একই সঙ্গে অনেক হিন্দু আছেন, যাঁরা গরু স্পর্শ করেন না, এমনকি কোনো মাছ-মাংসও খান না। যা একশ্রেণির হিন্দুর কাছে গ্রহণযোগ্য,আরেক শ্রেণির কাছে নয়। তা ছাড়া নাগরিকদের খাদ্য অভিরুচি নিয়ে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই। এই নিষেধাজ্ঞায় একটি বিষয় অবজ্ঞা করা হয়েছে যে, নিম্নবর্ণ ও দরিদ্রদের জন্য আমিষের সস্তা উৎস হচ্ছে গরু।
এ ছাড়া মাংসশিল্পের সঙ্গে জড়িত লোকজনের জীবন-জীবিকার ওপরও নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিনেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং এটা ভারতের অর্থনীতিতে নানাভাবে জড়িয়ে আছে। এ অবস্থায় বিজেপির বর্তমান শাসনামলে মৌলবাদ ও অজ্ঞতা এতটা মাথাচাড়া দিয়েছে যে, ভারতের পুরোনো ইতিহাসটাও সামনে চলে আসছে।ভারতের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই ‘রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে’ দীর্ঘদিন ধরে ‘ইউরিন থেরাপি’ নিতেন। সহজ কথায় বলা যায়, আক্ষরিক অর্থেই তিনি নিয়মিত নিজের প্রস্রাব খেতেন। ১৯৭৮ সালে মার্কিন টেলিভিশন সিবিএস নিউজের সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘সিক্সটি মিনিটস’-এ মোরারজি এই কথা শুধু স্বীকারই করেননি, ইউরিনথেরাপির নানা ‘উপকারী’ দিকও তিনি তুলে ধরেছিলেন। সবাইকে এই ‘মূত্রথেরাপি’ নিতেও বলেছিলেন তিনি। অন্যদিকে বিজেপির এই কালে ফিনাইলের বদলে গরুর মূত্র দিয়ে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অ্যালোপাথিক ওষুধ ছেড়ে গো-মূত্র ও গোবরের সমন্বয়ে তৈরি আয়ুর্বেদিক ওষুধকে সব রোগের প্রতিরোধক বলে দাবি করেছেন।
তাহলে এমন একটি দেশে সাধারণ শিবসেনা বা সংঘ পরিবারে সদস্যরা কোন পথে যাবে, তা সহজেই অনুমেয়। অথচ এই ভারতের দুজন শ্রেষ্ঠ নেতা ছিলেন সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক। তাঁরা হলেন মহাত্মা গান্ধী ও জওয়াহেরলাল নেহরু। গান্ধী কখনো দেবতার মন্দিরে যাননি। কখনো কোনো মূর্তির সামনে মাথা নত করেননি। তবে তিনি গীতার শ্লোকে আস্থা রেখেছেন বা নীতির সঙ্গে না গেলে বর্জনও করেছেন। শেষ জীবনে ফকিরের বেশ ধরা গান্ধী গুজরাটের সমরমতী নদীর তীরে যে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেখানে কোনো পূজা-পার্বণ ছিল না। সবাই মিলে নিজস্ব ঢঙে প্রার্থনা করতেন। ধর্ম-পুস্তকে যা লেখা আছে, সেসব আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করে মান্য করার বাধ্যবাধকতা না দেখিয়ে বরং পরিবর্তিত পৃথিবীর বাস্তব প্রেক্ষাপট ও মানব ইতিহাসের অগ্রগতির নিরিখে যুক্তিবাদ প্রয়োগ করে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের পর ধর্মাচার পালন করতেন অসাম্প্রদায়িক নেতা গান্ধী বা নেহরুরা।
খুব স্বাভাবিকভাবেই মৌলবাদ তাঁদের স্পর্শ করতে পারেনি। আর এখন মুম্বাইয়ে পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুরশিদ মাহমুদ কাসুরির লেখা বই প্রকাশ অনুষ্ঠান আয়োজন করার দায়ে সাবেক বিজেপি নেতা ও কলামিস্ট সুধীন্দ্র কুলকার্নির মুখে আলকাতরা লেপ্টে দেয় উগ্রবাদী শিবসেনারা। ওই মুম্বাইতেই পাকিস্তানি গজলশিল্পী ওস্তাদ গুলাম আলির কনসার্টও বাতিল করতে হয় সেই শিবসেনাদের দাবির মুখে। যদিও গেল বুধবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এসব ঘটনায় নীরবতা ভেঙে বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা বিজেপি সমর্থন করে না। দাদরির ঘটনা ও মুম্বাইয়ে পাকিস্তানি গজলশিল্পী গুলাম আলির অনুষ্ঠান বাতিল হওয়া দুর্ভাগ্যজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এসব ঘটনার সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার জড়িত নয় বলেও দাবি তাঁর। নির্বাচন-পূর্ববর্তী সময়ে বিশ্বের সব দেশ থেকে হিন্দুদের ফিরিয়ে আনা কিংবা ভারত থেকে মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান বা শিখদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করা বিষয়ে মোদির তর্জন-গর্জনে কেমব্রিজ ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৭৫ শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক ও মুম্বাইয়ের খ্যাতনামা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের অধ্যক্ষ ফাদার ফ্রেজার মাসকারেনহাস, লেখক অরুন্ধতী রায়, সালমান রুশদি বা নোবেল লরিয়েট অমর্ত্য সেনরা চিন্তিত হয়ে বলেছিলেন : মোদি ক্ষমতায়; এ ভাবনা আমাদের শঙ্কিত করে! সেক্যুলারিজম গোল্লায় ফেলে দেওয়া ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার নায়ক ও গরুর রাজনীতির আসল সওদাগর সেই মোদির কোনো আশ্বাসই কি আর এসব গণ্যমান্যর শঙ্কা দূর করে দিয়ে ভারতমাতার মুখে কালিমা লেপন করার নিদান হতে পারবে? গরুর চক্রেই যে ভূত হয়ে গেছে ভারতের বর্তমান রাজনীতি!
লেখক : সাংবাদিক, মাছরাঙা টেলিভিশন।