কুয়েতে শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন

Looks like you've blocked notifications!
কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে গতকাল রোববার অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। ছবি : এনটিভি

কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে গতকাল রোববার মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিত রাখার মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। পতাকা উত্তোলন করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামানসহ প্রবাসীরা।

এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে ছিল অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত, মহান ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন, বাণী পাঠ ও দিবসটির ওপর নির্মিত ভিডিওচিত্র প্রদর্শনী।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আবু নাসের, প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন কাউন্সেলর (শ্রম) মোহাম্মদ আবুল হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন কাউন্সেলর (পাসপোর্ট ও ভিসা) জহিরুল ইসলাম খান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন দ্বিতীয় সচিব হাসান মনিরুল মহিউদ্দিন।

দিবসটি উপলক্ষে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আশিকুজ্জামানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর। আলোচক হিসেবে ছিলেন বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হুসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানসহ অনেকে।

বাংলাদেশ দূতাবাসের অস্থায়ীভাবে গড়ে তোলা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামানসহ দূতাবাসের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ মিলিটারি কন্টিনজেন্টের সদস্যসহ অসংখ্য কুয়েত প্রবাসী উপস্থিত হন।

নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব পুনরায় বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে কুয়েত সরকারের স্বাস্থ্য নির্দেশনা বজায় রেখে দিবসটি পালন করা হয়।

১৯৫২ সালের এই দিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠীর চোখ-রাঙানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে।

মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শঙ্কিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।

তাঁদের এই আত্মদান নিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সরদার ফজলুল করিম তাঁর ‘বায়ান্নর ও আগে’ প্রবন্ধে লিখেছেন ‘বরকত, সালামকে আমরা ভালবাসি। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা বরকত সালাম আমাদের ভালবাসে। ওরা আমাদের ভালবাসে বলেই ওদের জীবন দিয়ে আমাদের জীবন রক্ষা করেছে। ওরা আমাদের জীবনে অমৃতরসের স্পর্শ দিয়ে গেছে। সে রসে আমরা জনে জনে, প্রতিজনে এবং সমগ্রজনে সিক্ত।’

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা (ইউনেসকো) মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও কয়েক বছর ধরে দিবসটি পালিত হচ্ছে।